- গুইমারা থানায় দুই মামলায় আসামি ৩০০ এবং সদর থানায় এক মামলায় আসামি ৮০০
- জনজীবন ও যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও দুই উপজেলায় ১৪৪ ধারা বহাল
খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনায় চার দিন পর তিন মামলা করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে গুইমারা ও সদর থানায় এ মামলা হয়। তিনটি মামলাতেই পুলিশ বাদী হয়েছে। এসব মামলায় ১১শ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা গুইমারা থানায় এবং একটি মামলা খাগড়াছড়ি সদর থানায় করা হয়েছে।
মামলাগুলোয় হত্যা, ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা ও ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে দাঙ্গা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে। খাগড়াছড়ি সদর থানায় করা মামলায় ৮০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে গুইমারা থানায় হওয়া দুটি মামলায় হত্যা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গুইমারা থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গুইমারায় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা হয়। এ সময় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পরবর্তী সময়ে ধানখেত থেকে তিন ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হত্যা মামলায় শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তি এবং সহিংসতা, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আড়াইশ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মামলা না করায় গুইমারা থানার এসআই সোহেল রানা বাদী হয়ে মামলা করেন।
এদিকে খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর জেলা সদরের মহাজনপাড়া, স্বনির্ভর ও উপজেলা পরিষদসংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাত সাত থেকে আটশ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, গুইমারায় নিহতদের পরিবার থেকে কেউ মামলা করেনি। এ ছাড়া গুইমারা ও খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ বা মামলা করেনি। ফলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা তিনটি রুজু করে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে এক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে জুম্ম ছাত্র-জনতা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এরপর থেকেই খাগড়াছড়িতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে পরবর্তী সময়ে তিন সদস্যের চিকিৎসক দল কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পায়নি।
১৪৪ ধারা বহাল
এদিকে খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা এখনো বহাল। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়িতে যানবাহন এবং লোকজনের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। জেলা থেকে দূরপাল্লার যান ছেড়ে গেছে। এ ছাড়া গতকাল খাগড়াছড়ি জেলার সাপ্তাহিক হাটের দিন হওয়ায় বাজারেও লোকজনের ভিড় দেখা গেছে।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হয়েছে। এরপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি মনে করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তাহলে ১৪৪ ধারা তুলে দেওয়া হবে।