ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫

রোগ প্রতিরোধ গবেষণায় ৩ বিজ্ঞানীর নোবেল জয়

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৫, ১১:৫৮ পিএম

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কেমন করে নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি না করে জীবাণু থেকে সুরক্ষা দেয়, সেই কৌশল উদ্ঘাটনের স্বীকৃতিস্বরূপ দুই দেশের তিন গবেষক চলতি বছর চিকিৎসায় নোবেল লাভ করেছেন।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশের সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট এ বছরের বিজয়ী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী ম্যারি ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের সিমন সাকাগুচির নাম ঘোষণা করে।

গত বছর চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক ভিক্টর অ্যাম্ব্রস ও গ্যারি রাভকুন। মাইক্রো আরএনএ আবিষ্কার এবং জিনের অভিব্যক্তি নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার ওপর আলো ফেলার স্বীকৃতিতে তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

পুরস্কার ঘোষণার সময় গতকাল সোমবার নোবেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্রাঙ্কো, রামসডেল ও সাকাগুচি ‘পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স সংক্রান্ত তাদের আবিষ্কারের জন্য’ চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছেন। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, যেন আমরা সব ধরনের জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করতে পারি এবং তার সঙ্গে অটোইমিউন রোগ এড়াতে পারি, এই বছরের পুরস্কার সে সম্পর্কিত।

এক বিবৃতিতে পুরস্কার প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘তাদের আবিষ্কার নতুন গবেষণা ক্ষেত্রের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং ক্যান্সার এবং অটোইমিউন রোগের মতো বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করেছে।’ পুরস্কারবিজয়ীরা সুইডেনের রাজার কাছ থেকে সোনার মেডেলও পাবেন।

নোবেলজয়ী এই বিজ্ঞানীরা পাবেন একটি মেডেল, একটি সনদপত্র এবং মোট ১১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। যেসব বিভাগে একাধিক নোবেলজয়ী থাকবেন, তাদের মধ্যে এই ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ভাগ হয়ে যাবে। বর্তমান বাজারে এর মান প্রায় ১২ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

১৯৬১ সালে জন্ম নেওয়া ম্যারি ই ব্রাঙ্কো যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন বলে নোবেল পুরস্কার কমিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে। তিনি এখন সিয়াটলের ইনস্টিটিউট ফর সিস্টেমস বায়োলজির ঊর্ধ্বতন প্রকল্প ব্যবস্থাপক।

ফ্রেড রামসডেল জন্মেছেন ১৯৬০ সালে। ২৭ বছর বয়সে লস এঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা এ নোবেলজয়ী এখন স্যান ফ্র্যান্সিসকোর সোনোমা বায়োথেরাপিউটিকসের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা।

এ ছাড়া ৭৪ বছর বয়সি সিমন সাকাগুচি জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৬ সালে ডক্টর অব মেডিসিন এবং ১৯৮৩ সালে পিএইচডি ডিগ্রি পান। তিনি এখন ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজি ফ্রন্টিয়ার রিসার্চ সেন্টারের সম্মানসূচক অধ্যাপক।

চিকিৎসাশাস্ত্রের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়েই এবারের নোবেল পর্ব শুরু হলো। মঙ্গলবার পদার্থবিদ্যা, বুধবার রসায়ন, বৃহস্পতিবার সাহিত্য এবং শুক্রবার শান্তিতে পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। সর্বশেষ ১৩ অক্টোবর অর্থনীতি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে নোবেল কমিটি।

নোবেল পুরস্কারের সূচনা হয় ১৯০১ সালে আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছাপত্র অনুযায়ী। ডিনামাইট আবিষ্কারক নোবেল তার বিপুল সম্পদ উৎসর্গ করেছিলেন মানবতার কল্যাণে বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার প্রদানের জন্য। পরে সংযোজিত হয় অর্থনীতির পুরস্কার, যা অর্থায়ন করে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিক্সব্যাংক।