ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

বললেন মির্জা ফখরুল

গণঅভ্যুত্থানের ত্যাগ যেন বৃথা না যায়

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৫, ০১:১৪ এএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২৪-এর জুলাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি, সেই বিজয়কে সুসংহত করতে হবে। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে কিন্তু সেই মতপার্থক্যের জন্য আমাদের যে আশা, যে স্বপ্ন, যে ছেলেগুলো প্রাণ দিয়েছে, তাদের যে আত্মাহুতি, তা যেন বৃথা না হয়ে যায়। আমরা আমাদের স্বপ্নকে যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে একটি প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ ও তার প্রয়াত সহধর্মিণী উম্মে সালমা আলো প্রণীত গ্রন্থসমূহের প্রকাশনা উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর লেখা গ্রন্থসমূহ হচ্ছে, ‘পূর্ব বাংলার বাম ও কমিউনিস্ট আন্দোলন’, ‘বঙ্গভঙ্গ’, ‘আমার জীবন ও আমার সংগ্রাম’ এবং উম্মে সালমা আলোর লেখা ‘জয়নপারের আলো’।

অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন-সংগ্রামের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই দেশকে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করাÑ এই দেশকে একটা বৈষম্যবিরোধী অর্থনীতিতে পরিণত করা, সাধারণ মানুষগুলোর অধিকারগুলোকে পৌঁছে দেওয়া, তাদের ভোটের অধিকার পৌঁছে দেওয়া, একটা গণতান্ত্রিক, আধিপত্যবাদবিরোধী এবং একই সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মাহবুব উল্লাহ যে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেনÑ এটা কখনো অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

প্রয়াত উম্মে সালমা আলোর সঙ্গে ওই সময়ে আত্মগোপনে থাকা বামপন্থি নেতা মাহবুব উল্লাহর বিয়ের অনুষ্ঠানের স্মৃতিও রোমন্থন করেন মির্জা ফখরুল। গতকাল ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মাহবুব উল্লাহকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমি প্রত্যাশা করছি যে, তার এই জন্মদিন আরও অনেকদিন আসুক।’

অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘এ দেশের মানুষ শুধু সুদিন দেখার জন্য, ভালো সময় দেখার জন্য ত্যাগ স্বীকার করছে। অনেক অত্যাচারিত হয়েছে সেই ব্রিটিশ শাসনের আমল থেকে। তারও আগে থেকে লড়াই-সংগ্রাম করেছে। শুধু একবার ভালো সময় আসবে এই ভেবে। সামনের দিনগুলো যাতে অত্যাচার-অবিচার, মানুষের অমযার্দা যাতে না হয় এটাই আমার প্রত্যাশা। একটি মুক্ত, স্বাধীন, সার্বভৌম, সুখী, সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হোক সেইটাই আমরা চাই।’

অনুষ্ঠানে আসা সহকর্মী, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, অর্থনীতিবিদ, চিকিৎসক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ।

কবি আবদুল হাই শিকদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আহমেদ কামাল, অধ্যাপক হায়াত হোসেন, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা, অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, ব্র্যাকের চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নজমুল হক নান্নু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, পিআইবি মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, এটিএন বাংলার পরিচালক বার্তা হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর বড় মেয়ে নায়লা তাহসিনা মাহবুব প্রমুখ।