রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদ্রাসার একমাত্র একতলা একাডেমিক ভবনটি দীর্ঘ সাত বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও আজও তা ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভবনটির ছাদ ও বিম থেকে নিয়মিত খসে পড়ছে পলেস্তারা, বেরিয়ে এসেছে রড। প্রতিটি পিলারে দেখা গেছে বড় বড় ফাটল। জীবন ঝুঁকি উপেক্ষা করে এই নাজুক ভবনেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। ভবনটির বেহাল দশার কারণে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আসংকা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরাও থাকেন চরম দুশ্চিন্তায়।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নে একমাত্র মাদ্রাসা এটি। এই মাদ্রাসায় এবতেদায়ি থেকে আলিম পর্যন্ত লেখাপড়া হয়। লেখাপড়ার দিক থেকেও এগিয়ে আছে মাদ্রাসাটি। কিন্তু ভবনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে এটি যে কোনো সময় সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের এই বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না।
মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি ও বালারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত জানান, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পার হলেও তেমন কোনো সংস্কার হয়নি। বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে ৩৫০ জন শিক্ষার্থী আছে। মাদ্রাসাটি পরিত্যক্ত ঘোষণা হওয়ার পরও শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। শিক্ষকেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছেন। মাদ্রাসাটির পরিত্যক্ত ভবনটি সংস্কার জরুরি।
মাদ্রাসাটির ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহজামিন, ফাহমিদা আরেফিন বলেন, ‘স্যার এইখানে বসে লেখাপড়া করতে ভয় লাগে। ছাদ ভেঙে আমরা আহত হই।’ অভিভাবক সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল হামিদ বলেন, পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস নেওয়া হয়। এ কারণে আমরা সন্তানদের মাদ্রাসায় পাঠাতে ভয় পাই।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসাটির তিন কক্ষবিশিষ্ট পরিত্যক্ত ভবনটিতে একটিতে শিক্ষক শিরনায়তন। আর বাকি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। ভবনটির প্রতিটি পিলারে বড় বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ভবনের সামনের অংশের বিম ভেঙে গেছে। বিদ্যালয়ের ভেতরের বিমগুলোর অবস্থাও করুণ। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাকিসব শ্রেণির পাঠকক্ষের অবস্থা আরও নাজুক। সেগুলোও অনেক পুরোনো ভাঙা টিনের ছাউনির কয়েকটি কক্ষে চলে পাঠদান।
বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তাহেরুল ইসলাম বলেন, শ্রেণিকক্ষ না থাকায় অনেকগুলো জীবনের ঝুঁকি জেনেও পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস নিতে বাধ্য হতে হয়েছে। এমনকি মাদ্রাসার মাঠে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করিয়ে মাদ্রাসার শ্রেণি কার্যক্রম চালানো হয়। মানসম্মত একটি একাডেমিক ভবন মাদ্রাসাটির সকল সমস্যা সমাধান দিতে পারে।
মিঠাপুকুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মোমেন ম-ল বলেন, মাদ্রাসার পরিত্যক্ত ভবনের বিষয়টি ইউএনওসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।
আপনার মতামত লিখুন :