ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

বেকার জীবন পেছনে ফেলে সফল গরু খামারি জুয়েল

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৫, ০৭:১৪ এএম

অদম্য ইচ্ছাশক্তি মানুষকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেয়, এমনই দৃষ্টান্ত গড়েছেন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার আটগ্রাম বেলহালী গ্রামের মোস্তাফিজার রহমান জুয়েল। চাকরি না পেয়ে তিনি গরু খামারকে জীবিকার হাতিয়ার বানিয়ে হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। এখন তিনি এলাকায় অনুকরণীয় খামারি হিসেবে পরিচিত।

২০১২ সালে বগুড়া আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে মনোবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন জুয়েল। চাকরি না পেয়ে ২০১৮ সালে মাত্র দুটি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভি দিয়ে শুরু করেন খামারের যাত্রা। বর্তমানে তার খামারে ছোট-বড় মিলে প্রায় ৫০টি গরু রয়েছে, যার মধ্যে ২০টি দুধাল গাভি। প্রতিদিন ১০০-১১০ লিটার দুধ সংগ্রহ হয়। স্থানীয় দই-মিষ্টির কারিগররা বাজারদরে (৫০-৭০ টাকা) বাড়ি থেকেই দুধ কিনে নিয়ে যান।

খামারের জন্য জুয়েল নিজ জমিতে উন্নত মানের নেপিয়ার ঘাস ও ভুট্টা চাষ করেন। এগুলো দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিতে সাইলেজ উৎপাদন করে গরুর খাদ্য জোগান দেন। খড়, ভুসি, সয়াবিন ও অন্যান্য উপাদানের সংমিশ্রণে প্রতিদিন গাভিদের খাবার সরবরাহ করা হয়।

গরুর সুরক্ষায় খামারে ইটের বাউন্ডারি, সিমেন্টের পাকাচাড়ী, প্রস্রাব নিষ্কাশনের ড্রেন ও নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা রাখা হয়। এতে রোগবালাই কম হয়। খামারের গোবর জৈব সার হিসেবে জমিতে ব্যবহার করেন তিনি।

জুয়েল বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে গো-খাদ্য কিনতে কষ্ট হচ্ছে। গরুর নতুন রোগও দেখা দিচ্ছে। তবে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শে নিয়মিত পরিচর্যা করছি। সরকারি সহায়তা পেলে বড় পরিসরে খামার গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’

প্রতিবেশী একরাম হোসেন ও সহিদুল ইসলাম জানান, এলাকায় জুয়েল এখন একজন অনুকরণীয় খামারি। তার সাফল্যে নতুন উদ্যোক্তারাও খামার করতে উৎসাহিত হচ্ছেন।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মোস্তাফিজার রহমান জুয়েল অত্যন্ত পরিশ্রমী খামারি। তাকে মিল্ক সেপারেটর মেশিন দেওয়া হয়েছে এবং নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

গরু খামারের ওপর নির্ভর করে জুয়েল আজ স্বাবলম্বী। বেকার থেকে সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন তিনি, যা অন্য তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত।