ঢাকা রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বাগদা-গলদা চিংড়ি চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষিরা

শেখ সেকেন্দার আলী, পাইকগাছা
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫, ০১:১১ এএম

*** চিংড়ি চাষে ঝুঁকছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ
*** বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি কর্মসংস্থান হচ্ছে হাজারো যুবকের
*** বছরে উৎপাদন হচ্ছে ২৭ হাজার টন মাছ

খুলনার পাইকগাছায় সাদা সোনাখ্যাত বাগদা চিংড়ি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রতিবছর বিভিন্ন ভাইরাসজনিত কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো না গেলেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন চিংড়িচাষিরা। সেই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি কর্মসংস্থান হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের। পাইকগাছার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চিংড়িচাষি গোলাম কিবরিয়া রিপন বলেন, ৮০ দশক থেকে উপকূলীয় এ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয় সাদা সোনাখ্যাত বাগদা চিংড়ি চাষ। চিংড়ি চাষ ব্যবস্থা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। অন্যান্য পেশা থেকে সবাই এগিয়ে আসতে থাকে চিংড়ি চাষে। বিগত ৪ দশকের ব্যবধানে এ অঞ্চলের বেশির ভাগ মৎস্য চাষ এবং সংশ্লিষ্ট এ খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। যদিও শুরুটা যতটা সহজ ছিল, এখন অতটা সহজ নেই চিংড়ি চাষ। রোগবালাইসহ বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যে উৎপাদন বৃদ্ধি, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এখানকার মৎস্যচাষিরা।

মৎস্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী উপজেলা থেকে বছরে উৎপাদন হচ্ছে ২৭ হাজার টন মাছ। যার মধ্যে চিংড়ি, সাদা মাছ, কাঁকড়া ও কুচিয়া অন্যতম। চিংড়ি চাষ ব্যবস্থা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। অন্য পেশা থেকে সবাই এগিয়ে আসতে থাকে চিংড়ি চাষে। সময়ের সঙ্গে একদিকে যেমন বেড়েছে রোগবালাইসহ নানা সমস্যা। তেমনি চাষ ব্যবস্থায় এসেছে কিছুটা পরিবর্তন। আগে সনাতন পদ্ধতি, এখন উন্নত সনাতন ব্যবস্থাসহ চিংড়ি কিংবা মৎস্য চাষে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছেন চাষিরা।

ফলে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ও মৎস্য চাষব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এখানকার চাষিরা। প্রশিক্ষণ ও পরামর্শসহ চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করছে দপ্তর ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। যদিও চিংড়ি চাষের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় টেকসই কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং ও সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন এখানকার চাষিরা।

মৎস্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় উৎপাদন ও আহরণের যেসব উৎস আছে তার মধ্যে রয়েছে, ৮ হাজার ৫৮০টি দিঘি এবং ৪ হাজার ৩৫৩টি পুকুর, ৪টি বাণিজ্যিক মৎস্য খামার, ১টি ভেনামী চিংড়ি খামার, ১৩২টি খাল, ১০টি নদনদী, ১৭ হাজার ৭৫টি কাঁকড়া এবং ২২৫টি গলদা খামার। এসব উৎস থেকে বছরে উৎপাদন হচ্ছে ২৭ হাজার টন মাছ। যার মধ্যে চিংড়ি ৫ হাজার ৮৮৪ টন, সাদা মাছ ১৮ হাজার ২৮৩ টন, কাঁকড়া ৩ হাজার ৩৫০ টন ও কুচিয়া ২০.৭৫ টন। মৎস্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এ বছর ও জাতীয় মৎস্য পুরস্কারের পেয়েছেন চিংড়ি চাষি গোলাম কিবরিয়া রিপন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক বলেন, ‘চিংড়ি সেক্টরের অগ্রগতিবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, পুকুর জলাশয়ের পানির ভৌত রাসায়নিক গুণাগুণ পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান, মৎস্য খাতে টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আমরা সব সময় পাশে আছি।’