দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড ২০২৫-২৬ মৌসুমে আখ মাড়াই শুরু করতে যাচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় কেরু চিনিকলের কেইন কেরিয়ারে আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে এ মৌসুম উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
চিনি উৎপাদন কারখানা, ডিস্টিলারি, জৈবসার কারখানা, বাণিজ্যিক খামার ও ওষুধ কারখানার সমন্বয়ে গঠিত দেশের অন্যতম বৃহৎ এ শিল্প কমপ্লেক্সের চিনি কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে লোকসান গুনে আসছে। তবে সরকারিভাবে চিনির মূল্যবৃদ্ধির কারণে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে চিনি কারখানাটি।
এদিকে, প্রায় ১০২ কোটি টাকা ব্যয়ে মিলস হাউসে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করে চিনিকলটি আধুনিকায়নের কাজ শেষ পর্যায়ে। বিপুল অংকের এই প্রকল্পটি চালু হলে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়বে। তবে এলাকায় আখ চাষের পরিমাণ কমতে থাকায় সংকটে পড়েছে দেশের ঐতিহ্যবাহী এ চিনিকলটি।
কেরু সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৭২ দিনে ৭৬ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার ২৫৬ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে শতকরা ৫ দশমিক ৬ ভাগ। প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার টন আখ মাড়াই করবে চিনিকলটি। মিল জোনে এবার দ-ায়মান আখ রয়েছে ৫ হাজার একর জমিতে।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাব্বিক হাসান বলেন, ‘আখ মাড়াই শুরু করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ মৌসুমে চিনি কারখানায় লোকসান কমিয়ে আনতে সবাই মিলে কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গেল মৌসুমের মতো এ মৌসুমেও কোদাল দিয়ে আখ কাটা হচ্ছে। এতে করে কয়েক টন আখ বেশি পাওয়া যাবে। আখ বেশি পাওয়া গেলে স্বাভাবিক ভাবেই চিনি উৎপাদনের পরিমাণও বেড়ে যাবে।’
২০২৫-২৫ অর্থবছরে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি নিট মুনাফা করেছে ১২৯ কোটি টাকা। ডিস্টিলারি ইউনিটে মুনাফা করেছে ১৯০ কোটি টাকা, জৈবসার কারখানায় মুনাফা করেছে ৭৮ লাখ টাকা, বাণিজ্যিক খামার থেকে মুনাফা হয়েছে ৬৮ লাখ টাকা ও ওষুধ কারাখানা থেকে মুনাফা করেছে ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা। পাঁচটি ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত কেরু অ্যান্ড কোম্পানি ৪টি ইউনিটে মুনাফা করলেও চিনি ইউনিটে লোকসান হয়েছে ৬২ কোটি টাকা। এ ছাড়া চলতি বছর ১৪০ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব কোষাগারে জমা দিয়েছে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি।

