ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে চিকিৎসকের আত্মহত্যা

রাজৈর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৫, ০২:১২ এএম

মাদারীপুরের রাজৈরে প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে অনিক আশ্চর্য (৩৫) নামে এক চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের শিমুলতলা এলাকার নূর জাহান কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলার ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত অনিক পার্শ্ববর্তী এক নম্বর ব্রিজ এলাকার সিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জরুরি বিভাগের (ডিএমএফ) চিকিৎসক ছিলেন। তিনি একই উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক অঞ্জন আচার্যের একমাত্র ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ, হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় আট বছর ধরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে টেকেরহাট সিটি হসপাতালে কর্মরত ছিলেন অনিক। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা দেওয়ার জন্য টেকেরহাট নূর জাহান কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে তিনি ভাড়া থাকতেন। একই সঙ্গে পাশের রুমে থাকতেন ওই হসপাতালের এক্স-রে অপারেটর নৃপেন। গত সোমবার রাতে প্রতিদিনের মতো রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান শেষে অনিক বাসায় আসেন এবং নৃপেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের গানের অনুষ্ঠানে যান। এ সময় প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়া করে তাকে মেসেঞ্জারে ভিডিও কলে রেখে ফ্যানের সঙ্গে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অনিক। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নৃপেন এসে চা খাওয়ার জন্য তাকে ডাকতে যান। এ সময় দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখেন অনিক ঝুলছেন। তাৎক্ষণিক তিনি হসপাতাল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। এরপর রাজৈর থানায় জানালে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মরদেহটি উদ্ধার করে এবং মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

সিটি হসপিটালের মালিকপক্ষের আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ বছর যাবৎ কাজ করছেন অনিক। প্রেমের সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। গত রাতে ওই প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তাকে ভিডিও কলে রেখেই আত্মহত্যা করেছেন।’

অনিকের মা চিনু আচার্য বলেন, ‘বিয়ে করার আগে থেকেই ওই মেয়ের (মুন্নি) সঙ্গে সম্পর্ক হয়, ওর জন্য আমার অনিক আত্মহত্যা করেছে, ওর ফাঁসি চাই। আর যেন কোনো মায়ের বুক এভাবে খালি না হয়।’

রাজৈর থানার ওসি শেখ আমিনুল ইসলাম বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমঘটিত কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে যার জন্য তিনি আত্মহত্যা করেছেনÑ কেউ বলছে কথিত স্ত্রী আবার কেউ বলছে প্রেমিকা। এ ঘটনায় একটা অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।