আজ থেকে চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে দুই দলের প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে দল গঠন নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভের বিস্ফোরক ঘটল অধিনায়ক লিটন কুমার দাসের কথায়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ক্রিকেট বোর্ড থেকে তাকে যে দল দেওয়া হবে, সেটি নিয়েই তাকে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ, দল গঠনে অধিনায়কের মতামত নেওয়া হয়নি বলে দাবি লিটনের।
বিসিবি ও নির্বাচক কমিটি নিয়ে লিটন এমন কিছু কথা বলবেন, সেটি খুবই অপ্রত্যাশিত ছিল। টি-টোয়েন্টি দল থেকে শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই ক্রিকেটার দল থেকে বাদ পড়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন লিটন। তিনি বলেন, ‘শামীম থাকলে অবশ্যই ভালো হতো। ইটস নট মাই কল, টোটালি সিলেক্টরস কল। আমি জানি না কেন, তবে নির্বাচকেরা আমাকে কোনো কিছু নোটিশ করা ছাড়াই শামীমকে বাদ দিয়ে দিয়েছেন দল থেকে, উইদাউট এনি নোটিশ। আমি এত দিন জানতাম যে একটা দল যখন কেউ হ্যান্ডল করে, অন্তত অধিনায়ক জানে যে কোন ক্রিকেটার কখন দলে আসবে, কখন বাইরে যাবে।’ লিটন আরও বলেন, ‘আমি আশা করি, বাংলাদেশের প্রত্যেক ক্রিকেটারই সেরা ক্রিকেটার। এ জন্যই জাতীয় দলে আছে। যে ১৫ জনকেই নেওয়া হোক না কেন, তারাই ভালো করবে। তবে শামীমকে বাদ দেওয়ার পেছনে কোনো কারণ আমি দেখি না। জানিও না, কেন বাদ পড়েছে সে।’
শামীমের বদলে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা পেয়েছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে বিশেষ কিছু করেননি এই ক্রিকেটার। রাইজিং স্টার এশিয়া কাপ ও বিগত জাতীয় লিগের টি-টোয়েন্টিতেও তিনি রান পাননি। শামীম যেখানে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান, অঙ্কনকে নেওয়া হয়েছে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে। শামীম বাদ পড়ায় মিডল অর্ডারে কোনো বাঁহাতি ব্যাটসম্যানও নেই বাংলাদেশের। এতে প্রতিপক্ষ ম্যাচ-আপে সুবিধা পাবে কি না, জানতে চাওয়া হলে ক্রিকেট বোর্ডের দিকে ইঙ্গিত করে লিটন বলেন, ‘গুড পয়েন্ট, আমার মনে হয়, এটা আমাদের ভাবা উচিত। আপনার মাথায় এসেছে এই ব্যাপারটি, সিদ্ধান্তটা শেষ পর্যন্ত যদি আমাদের ওপর থেকে আসত, খুব ভালো হতো। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনাকে ডানহাতি-বাঁহাতি (সমন্বয়) করতে হবে।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য যে দল গঠন করা হয়েছে, সেটি নিয়েই ভালো কিছু করার চেষ্টা করবেন লিটন। তিনি বলেন, ‘এখন যেসব ক্রিকেটার দলে আছে, তারাই এই মুহূর্তে সেরা এবং আমি বিশ^াস করি, যে কেউ বাংলাদেশ দলে আসবে, তারা সেরা। সেরা হয়েই এখানে আসছে। তারা ডেলিভার করার চেষ্টা করবে।’ দল নির্বাচনে অধিনায়ক ও প্রধান কোচের সঙ্গে আলোচনা করা সাধারণ নিয়ম। কাউকে বাদ দিতে হলেও অধিনায়কের ভাবনা জানতে চাওয়া হয়। তবে লিটন জানালেন, তার সঙ্গে কোনো প্রকার পরামর্শ করেননি নির্বাচকেরা। বরং তাকে বলা হয়েছে, যে দল দেওয়া হবে সেটা নিয়েই খেলতে হবে। লিটন বলেন, ‘আমাকে পুরোপুরি বলা হয়েছে, সিলেক্টর প্যানেল থেকে এবং বোর্ড থেকে যে আমাকে যে দলটা দেওয়া হবে, সেই দলটা নিয়েই কাজ করতে হবে। এখানে আমার বলার কিছু থাকবে না যে, আমি কোন ক্রিকেটারকে চাই, কাকে চাই না। আমি এত দিন জানতাম, একটা মানুষ যখন অধিনায়ক, তার একটা দল গোছানোর একটা পরিকল্পনা থাকে। তবে সম্প্রতি কয়েক দিন থেকে জানতে পারলাম, যে দলটা আমাকে দেওয়া হবে, আমার কাজ হচ্ছে সেই দলটাকে নিয়েই মাঠে ভালো কিছু দেওয়া।’ একই সঙ্গে বিশ^কাপের দল নিয়েও কেমন একটা অসহায়ত্ব বেরিয়েছে লিটনের কণ্ঠে, ‘ইনসালটিং, জায়গা বলব না। তবে আমার মনে হয়, কোচ এবং অধিনায়কের জানা উচিত দল নিয়ে। সেই জায়গা থেকে আমরা কিছুই জানি না। যদি বিশ^কাপেও একই জিনিস ঘটে, আমাকে যে দলটা দেওয়া হবে, আমি সেই দল থেকেই চেষ্টা করব একাদশ খেলানোর।’

