বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আজিজুর রহমান, চৌগাছা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম

চৌগাছায় কৃষকের ৩ টাকার সিম হাত বদলেই ৩০!

আজিজুর রহমান, চৌগাছা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম

চৌগাছায় কৃষকের ৩ টাকার সিম হাত বদলেই ৩০!

যশোরের চৌগাছায় প্রতি কেজি সিম তিন থেকে চার টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। অথচ কৃষকের কাছ থেকে তিন টাকায় কেনা সেই সিম হাত বদলে বাজারের মধ্যেই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। অপরদিকে, মুলা’র সরবরাহ কম থাকলেও প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি হয়েছে এক টাকা কেজি। সেই মুলাও হাত বদলে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি।

শুক্রবার (১০জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে উপজেলার বড় কাঁচাবাজার ও খুচরা সবজি বাজার ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে।

বাজারের আড়ৎদার (পাইকারি ব্যবসায়ী) ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার সবজির দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, মিস্টি কুমড়া, বিটকপি বড় বাজারে সরবরাহ তুলনামূলক কম। তারপরেও বাজারে সবজীর দাম অনেক কম। কারন হিসেবে আড়ৎদার ও কৃষকরা বলছেন, এ অঞ্চলের সবজি যেসব এলাকায় বেশি বিক্রি হতো, সেসব এলাকার সবজি ভালো উৎপাদন হওয়া ব্যাপারিদের কাছে সবজির চাহিদা ও দাম কমে গেছে।

শীতের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে তুলনায় সকল ধরণের সবজির দাম কমে গেছে। আড়ৎদার ও কৃষকরা বলছেন, শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সিম ৭ থেকে ৮টাকা কেজি এবং তার আগের শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ৮ থেকে ১০টাকা কেজি পাইকারি বিক্রি হয়েছিলো। তবে ২৭ ডিসেম্বরের তুলনায় মিস্টি কুমড়া কেজিতে ৫ থেকে ৭, বেগুন ৩ থেকে ৪ টাকা, পেয়াজের ফুল (কালি) ৫ থেকে ৭ টাকা, মরিচ ৫ থেকে ৭টাকা, গোলআলু ১০ থেকে ১৫, টমেটো ৮ থেকে ১০ টাকা কমেছে।

বড় কাঁচা বাজারের আড়ৎদার মুকুল হোসেন বলেন, শুক্রবার পাইকারিতে মূলা বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ১ টাকা, সিম ৩ থেকে ৪ টাকা, মিস্টি কুমড়া ১৫ থেকে ২০, বেগুন ১১ থেকে ২০, বাঁধাকপি (প্রতিটি) ৭ থেকে ৮, ফুলকপি প্রতি পিস ৩ থেকে ৪, ওলকপি ২ থেকে ৩, পেঁয়াজের (ফুল) কালি ২ থেকে ৩, কাঁচাকলা ৮ থেকে ১৫, পালংশাক ৪ থেকে ৫, মরিচ ৩৫ থেকে ৩৮, পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে। লাউ (প্রতিটি) বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা, নতুন আলু (স্থানীয়) ২৫ থেকে ৩৫, টমেটো ২৫ থেকে ৩০, মেটেআলু ৪০ থেকে ৪৫, পেঁপে ১০ থেকে ১২, ধনেপাতা ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

চৌগাছা সদর ইউনিয়নের মন্মথপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, শুক্রবার ২ কজি ওজনের ফুলকপি প্রতিটি ৩ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। এছাড়া গোলআলু ২৬টাকা ও পেঁয়াজ ৩৫টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, ফুলকপি ও বাঁধাকপি’র দাম একেবারেই না থাকায় চাষিরা ক্ষেতে অন্য সবজি রোপণের জন্য চাষ দিয়ে দিচ্ছেন। এজন্য ফুলকপি ৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, না হলে বাজারে ফেলে রেখে যেতে হতো।

তবে পাইকারি বাজারের মধ্যেই (৫ থেকে ১০ফুট দূরত্বে) খুচরা বিক্রি কেন্দ্রে এবং শহরের খুচরা বাজারে (১০০ মিটার দূরের) মূলা বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ১৫ টাকা, সিম ২০ থেকে ৩০ টাকা, মিস্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৩৫, বেগুন ৩০ থেকে ৩৫, বাঁধাকপি (প্রতিটি) ১৫ থেকে ২০, ফুলকপি (প্রতিটি) ১০ থেকে ২০, ওলকপি ১৫ থেকে ২০, পেঁয়াজের (ফুল) কালি ১৫ থেকে ১৮, কাঁচাকলা ২৫, মরিচ ৬০ থেকে ৮০, পেয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে। লাউ (প্রতিটি) বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা, নতুন আলু (স্থানীয়) ৩৫ থেকে ৪০, টমেটো ৪০ থেকে ৪৫, মেটেআলু ৬০থেকে ৬৫, পেপে ২০ থেকে ৩০, ধনেপাতা ৪০ থেকে ৬০টাকা দরে কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

পাইকারিতে এই মূল্য কমে যাওয়ার প্রভাব খুচরা বাজারে কিছুটা পড়েছে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ি (আড়ৎদার) মুকুল হোসেন। তিনি বলেন, খুচরা বিক্রেতারা যে পরিমাণ সবজি ক্রয় করেন তার সম্পূর্ণটা বিক্রি হয় না। এছাড়া খাজনা, জায়গার ভাড়া, ব্যবসায়ীর মুজুরী ও ইনভেস্ট অনুযায়ী লাভ সব হিসেব মিলিয়ে তাদের বিক্রি করতে হয়।

বাজারে সবজির দাম এতো কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চট্রগ্রাম, নোয়াখালি, কুমিল্লাসহ দেশের যেসব অঞ্চলে চৌগাছার সবজি বিক্রি হয় সেসব এলকায় স্থানীয় খেতের সবজি বাজারে চলে এসেছে। ওই এলাকায় এবার সবজির ফলনও ভালো হয়েছে এসব কারনে ব্যাপারিদের কাছে সবজির চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহ তুলনামূলক কম হলেও দাম কমে গেছে।

তবে গত বছরের চেয়ে এবার সবজির দাম অনেক কম জানিয়ে ওই ব্যবসায়ী বলেন, এবারের আবহাওয়া অনুকূল থাকায় সবজির ফলন ভালো হয়েছে। এবং চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহও ভালো। সে কারনে দামও গত বছরের চেয়ে কম।

মুকুল হোসেনের গত বছরের হিসাবের খাতা ঘেটে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারী (শুক্রবার) পাইকারিতে সিম বিক্রি হয়েছিলো ২০ থেকে ২২ টাকা, পেয়াজ ৬৮ থেকে ৭০, কাঁচা মরিচ ৬৫ থেকে ৭০, টমেটো ৪০ থেকে ৪৩, পেঁপে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি। এছাড়া লাউ প্রতিটি ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিলো। মুকুল হোসেন ও আরেক আড়ৎদার আব্দুস সালাম বলেন, গত বছর (২০২৪) সালে এই সময়ে ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০, বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিলো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুসাব্বির হোসেন বলেন, দেশের আবহাওয়া অনুকূল থাকায় সব এলাকায় স্থানীয় সবজি বাজারে এসে গেছে। ফলে আমাদের বাজারে সরবরাহ কিছুটা কম হলেও ব্যাপারিদের কাছে চাহিদা কমে গেছে। এজন্য দাম কিছুটা কম। তিনি আরও বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করছি ও খোঁজ-খবর রাখছি।

আরবি/এইচএম

Link copied!