কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে অসময়ে ভাঙন চলছে। গত এক মাস ধরে চলা এ ভাঙনে ইতোমধ্যে ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের ২৬টি বসতবাড়ী, মসজিদ, রাস্তাঘাটসহ কয়েক একর ফসলি জমি ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে। নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে ওই ইউনিয়নের সুখেরবাতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশ। ভাঙনের হুমকীতে রয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি, মসজিদ, রাস্তাঘাটসহ কয়েক’শ একর ফসলি জমি। ব্রহ্মপুত্রের এমন আগ্রাসী ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। তবে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে বরাদ্দ না থাকায় ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় এখন কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না।
ভাঙন কবলিত এলাকা গুলো হলো- শৈলমারী ইউনিয়নের সুখের বাতি, ইটালুকান্দা, সাহেবের আলগা, চর গেন্দার আগলা, চরঘুঘুমারী, ঘুঘুমারী, খেরুয়ারচর, সোনাপুর, চর সোনাপুর, পূর্ব খেরুয়ারচর, পূর্ব খেদাইমারীসহ ১১টি গ্রাম
সুখেরবাতি গ্রামের নুরুল হক, মজিদ মিয়া, সোনা মিয়া জানান, অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে অনেক জমি, রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে নদীতে গেছে। দ্রুত নদী ভাঙ্গনরোধের কাজ না করলে ভয়াবহ পরিস্থির সৃষ্টি হবে। সরকারের কাছে আমাদের জোরদাবী ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনরোধে জরুরী ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করে আমাদের রক্ষা করুন।
চর সোনাপুর গ্রামের মাফুজল হক আক্ষেপ করে বলেন, নদী ভাঙ্গন বাড়ির কাছে আসায় ঘরের চালের টিন খুলে অন্য জায়গায় নিয়ে রাখছি। জায়গা ও অর্থের অভাবে কোথাও ঘর উঠাতে পারছিনা। আমরা গরিব মানুষ আমরা এখন পর্যন্ত কোন সহায়তা পাই নাই। আমাগরে কেউ দেখতে আসে নাই। আমাদের দুঃখ কেউ বোঝে না।
স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য তুহিন মিয়া বলেন, ভাঙনের হুমকিতে থাকা আমার ওয়ার্ডের সুখের বাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশ ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকায় এক মাস ধরে স্কুলটিতে পাঠদান বন্ধ ছিলো। আজ থেকে ওই স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পরলো।
তিনি আরও বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে আমার ওয়ার্ডের বেশকিছু বসত বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে ভাঙনের মুখে থাকা প্রায় ২শ বসত বাড়ি। ভাঙনের হুমকীতে রয়েছে অন্তত ১শ বসতবাড়ি।
চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এইচ এম সাইদুর রহমান দুলাল বলেন, অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ব্যাপক হারে নদী ভাঙ্গছে। গত এক মাসে চরশৌলমারী ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের ২৬টি বসত বাড়ী, মসজিদ, রাস্তাঘাটসহ কয়েক একর ফসলী জমি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলিন হয়েছে। এতেকরে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে চরশৌলমারী ইউনিয়নটি হারিয়ে যেতে বসেছে। যা দেখার কেউ নেই।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন বেড়ে যাওয়ায় সুখেরবাতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার উপক্রম হওয়ায় জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারের অনুমতিক্রমে প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ ১৬ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।
রৌমারী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল দিও বলেন, অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনের বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ না থাকায় এই ভাঙ্গন কবলিত মানুষদের সহায়তা করতে পারিনি। বিলিনের পথে সুখেরবাতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নিলামে বিক্রিয় করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদের বাম তীর ব্যাপক হারে ভাঙ্গছে । বরাদ্দ না থাকায় ভাঙ্গন কবলিত এলাকাগুলোতে কিছুই করতে পারছি না। তবে এ নদী শাসনের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া আছে বরাদ্দ আসলেই কাজ শুরু করা হবে।

 
                             
                                    -20250128060029.jpg)

 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন