ঢাকা রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫

বরগুনায় চাপিলার নামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশের পোনা

বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ০৩:৪৬ পিএম
বিক্রির জন্য ওজনে তোলা হয় ইলিশের পোনা। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

বরগুনার বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে নিষিদ্ধ বিভিন্ন জাল দিয়ে অবাধে ধরা হচ্ছে ইলিশের পোনা।

এসব পোনা এলাকার হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে ‘চাপিলা’ মাছ হিসেবে। সেই সঙ্গে বানানো হচ্ছে শুঁটকিও। 

মৎস্য বিভাগের দৃশ্যমান কোনো অভিযান না থাকায় অসাধু জেলেরা ইলিশের পোনাসহ নানা মাছের পোনা নিধনের পাশাপাশি বাজারজাত করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের চোখের সামনেই পৌর এলাকার হাটবাজারসহ বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে ইলিশের পোনা। এ ছাড়াও এই ইলিশের পোনা পরবর্তী সময়ে শুঁটকি বানিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। যেখানে এই ইলিশের পোনা বিক্রি করা ও ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীতে নিষিদ্ধ জালে প্রতিদিন ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের যে পরিমাণ পোনা মাছ নিধন হচ্ছে তাতে আগামী মৌসুমে ইলিশ মাছ আহরণে চরম সংকট দেখা দিতে পারে।

নদীতে ছোট ফাঁস জালের অবাধ ব্যবহারে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন, বংশবিস্তার ও বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। মৎস্য আইনে মাছের পোনা সংরক্ষণে সোয়া চার ইঞ্চির কম ফাঁস জাল ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।

কিন্তু এই নদীগুলোতে জেলেরা আধা ইঞ্চির কম থেকে পৌনে এক ইঞ্চি ফাঁস জাল ব্যবহার করে ছোট মাছ নিধন করছেন।

পাথরঘাটা থেকে ইলিশ বিক্রির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চোখের সামনেই প্রতিদিন বাঁধা জাল, গোপজাল, বেহুন্দিজাল ও কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন অবৈধ জাল দিয়ে মাছের পোনা ধংস করা হচ্ছে।

তারা বলেন, ‘তিন শ’র বেশি নৌকায় ভাসা জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। জালে জাটকা, পোয়া, তপসি, টেংরাসহ অন্য প্রজাতির অনেক মাছ আর পোনা ধরা পড়ে। বিক্রিযোগ্য মাছ বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করে। আর হাটবাজারে বিক্রির অযোগ্য মাছ শুঁটকি পল্লীতে বিক্রি করে দেয়।’


 
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, প্রসাশনের নাকের ডগায় এভাবে অবৈধ বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে ইলিশের পোনা শিকার করলে ইলিশের বংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। 

তিনি আরও বলেন, এভাবে চলতে থাকলে নদ-নদীতে পানি থাকবে, কিন্তু মাছ থাকবে না।
 
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, আমরা গত মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৫০টির বেশি অভিযান পরিচালনা করেছি। যেহেতু জেলায় তিনটি নদী আর আমাদের জনবল কম, ফলে সব জায়গায় পৌঁছানো আমাদের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব নয়। এই সুযোগে অসাধু জেলেরা ইলিশের পোনা ধরে চাপিলা বলে গোপনে বিক্রি করছে। আমরা নদীতে টহল জোরদার করেছি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান খান বলেন, বিভিন্ন এলাকার অসাধু জেলেরা অবৈধ জাল দিয়ে ইলিশের পোনাসহ নানা জাতীয় পোনা নিধন করছে। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।