স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে স্ত্রী মোছা. শাহিদা আক্তার রুমার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ৩ বছর ২ মাস পর তার স্বামীর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) ওই ব্যক্তির লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও এম সাজ্জাদুল হাসান।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়া গ্রামে ২০২২ সনের ১৭ মার্চ বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে মারা যান মৎস্য ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান খান চপল। তিনি ওই গ্রামের নাজিম উদ্দিন খানের ছেলে।
তার বাবার দাবি, তার ছেলে চপল বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গৌরীপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছিল।
অপরদিকে, রোকনুজ্জামান চপলের স্ত্রী দাবি করেন, সম্পত্তির লোভে তার স্বামী চপলকে হত্যা করা হয়েছে। বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে মারা গেছে বলে প্রচার করে হত্যার ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে গৌরীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও আমলে নেয়নি পুলিশ।
পরে তিনি ময়মনসিংহ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সানোয়ার জাহান বলেন, ২০২২ সালে এ বিষয়ে আদালতে মামলা করা হয়। সিআর তালিকাভুক্ত মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশে ফরেনসিক রির্পোটের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়। এ ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্তকাজ চলছে।
অপরদিকে গত বছরের ২৬ জুন স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে শাহিদা আক্তার রুমা ও তার দুই সন্তান নিয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেন।
এ অনশনে মায়ের সঙ্গে অনশনে ছিলেন কন্যা সুফফাত জাহান লামিয়া ও তার দুই পুত্র আবদুল্লাহ আল আফ্রিদি ও আবদুল্লাহ আফিফ। এতে শহরজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রুমার এ আকুতির সমর্থন দেন হাজারো নেটিজেন সমর্থন।
শাহিদা আক্তার ব্যানারে লেখেন, ‘আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। আমার ও এতিম তিন সন্তানের ওপর হওয়া অন্যায়-অত্যাচারের বিচার চাই।’
বাড়িঘর, জমাজমি, মোটরসাইকেল ও ব্যবসার অর্থ ফেরত চাওয়ার বিষয়টিও ব্যানারে উল্লেখ করেন এ নারী।
রুমা বলেন, আমার স্বামীর অনেক সম্পদ ছিল। সমিতির অনেক টাকা ছিল। এসবের লোভে ভাসুর বিপ্লব খান আমার স্বামীকে মেরেছে। আর এ কাজে সহযোগিতা করেছে শ্বশুর নাজিম উদ্দিন। ঘটনার পর পুলিশের কাছে বহুবার গিয়েছি। ওসির হাতে-পায়ে ধরেছি। তারপরও মামলা নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, কোর্টে মামলা করার পর পুলিশ প্রতিবেদন দিয়েছে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে মারা গেছে। আমার সেই মামলাও আদালত খারিজ করে দেয়। এরপর আবার কোর্টে আবেদন করেছি, আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।