ঢাকা শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫

তলিয়ে গেছে নিঝুম দ্বীপ, রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে হরিণ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২৫, ০৯:৪৯ পিএম
জোয়ারের পানিতে ঘুরছে নিঝুম দ্বীপের রাস্তায় ঘুরছে হরিণ । ছবি- সংগৃহীত

সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে প্রবল জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ। রাস্তাঘাট, বাজার ও বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে জোয়ারের পানিতে। এমন পরিস্থিতিতে লোকালয়ে আশ্রয় নিয়েছে একটি মায়া হরিণ। 

দ্বীপের নামার বাজার এলাকায় জোয়ারের পানিতে হরিণটি নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন একটি ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে স্থানীয় এক বাসিন্দা ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে থাকলেও হরিণটি স্বাভাবিকভাবে হাঁটছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হরিণটি বন বিভাগের অধীনে পোষ্য। দ্বীপের নামার বাজার এলাকায় বন বিভাগের কার্যালয়ের নিচেই সাধারণত অবস্থান করে সে। পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র এই হরিণের সঙ্গে ছবি তুলতেও দেখা যায় অনেককে।

নিঝুম দ্বীপ বন বিট কর্মকর্তা মো. সোহাগ বলেন, ‘হরিণটি এ ধরনের জোয়ারে অভ্যস্ত। পানি বাড়লে নিজেই উঁচু জায়গায় চলে যায়, আবার পানি নামলে ফিরে আসে। তাই আলাদা করে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।’

দ্বীপের নামার বাজার, বন্দরটিলা বাজারসহ বেশিরভাগ এলাকা জোয়ারে তলিয়ে গেছে। অনেক বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে নিদারুণ ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে পানি এতটাই বেড়েছে যে, বাজারঘাট থেকে শুরু করে ঘরের ভেতর পর্যন্ত ঢুকে গেছে। রান্নাবান্না বন্ধ, স্বাভাবিক চলাচলও থেমে গেছে।’

হাতিয়ার নলচিরা ঘাট এলাকাও তলিয়ে গেছে জোয়ারে। প্রবল বাতাস ও বৃষ্টিতে ঘাটে অবস্থানরত শতাধিক মানুষ আটকা পড়েছেন। নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ দুই দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে জরুরি প্রয়োজনে দ্বীপ থেকে কেউ বের হতে পারছেন না।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলা উদ্দিন বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে দ্বীপের বেশ কিছু এলাকা তলিয়ে গেছে। তবে কোথাও কোনো প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষতির তথ্য এখনো মেলেনি।’

বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে জেলা শহর মাইজদীর ফ্ল্যাট রোড, শিল্পকলা একাডেমির পাশের সড়ক, হাকিম কোয়ার্টার এলাকাসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়েন শহরবাসী।

জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে নোয়াখালীতে।

আরও বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সামনের দিনগুলোতেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বজায় থাকতে পারে।’