বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার উথলী পূর্বপাড়াসহ আশপাশের গ্রামে পানি নিষ্কাশনের প্রধান ড্রেন ভরাট করায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এতে করে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে, পাশাপাশি প্রায় ৬০ একর জমির ফসল নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সরেজমিনে উথলী পূর্বপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় মোকামতলা-জয়পুর মহাসড়কের বড়িতলা থেকে উথলী পূর্বপাড়া পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ও কবরস্থানে পানি জমে রয়েছে। জমিতে পানি জমে থাকায় ফসলের পচন দেখা দিয়েছে। এলাকার কৃষকেরা কপি, কলা, মরিচ, কচু, আলুসহ প্রায় ২শ বিঘা জমির ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দুই মৌজার (সন্যাসী ধোন্দাকোলা ও উথলী) খাস জায়গা দিয়ে পানি নিষ্কাশনের যে ড্রেন ছিল, তা ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির সঙ্গে সংযুক্ত করে ভরাট করে দিয়েছেন একই এলাকার মৃত পঁচা মণ্ডলের ছেলে ইনছের আলী (৬৫)। ফলে উথলী পূর্বপাড়া, বেড়াবালা, পাইকপাড়া, মণ্ডলপাড়া, খলিফাপাড়া ও গাছুয়াপাড়াসহ প্রায় ১০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উথলী পূর্বপাড়ার বাসিন্দা নাঈম মণ্ডল বলেন, ‘আগে ড্রেনের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি করতোয়া নদীতে গিয়ে মিশত। এখন ড্রেনটি ভরাট করে দেওয়ায় আশপাশের গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে শুধু চলাচলই নয়, কৃষিকাজও স্থবির হয়ে পড়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘এই রাস্তাই ৫ গ্রামের মানুষের একমাত্র চলাচলের পথ। বর্ষার মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। শিশুদের স্কুলে যাওয়া, রোগী পরিবহন এবং কৃষিপণ্য বাজারে নেওয়া সবকিছুই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন। তারা জানান, পূর্বে উপজেলা চেয়ারম্যান মীর শাহে আলম কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তবে এরপর আর কেউ কোনো ব্যবস্থা নেননি।
ইনছের আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা আছে। আমরা শিগগিরই সরেজমিন তদন্ত করে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন