ভোলার চরফ্যাশনে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, ভরণপোষণ না দেওয়া ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে নিজের ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক মা।
চরফ্যাশন উপজেলার মুজিবনগর এলাকার বাসিন্দা বিবি ফাতেমা বুধবার (৯ জুলাই) ছেলে মাকসুদ মোল্লা ও তার স্ত্রী কহিনুর বেগমকে আসামি করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, স্বামী মারা যাওয়ার পর ছয় সন্তানকে সম্পত্তি সমানভাবে ভাগ করে দেন বিবি ফাতেমা। তবে বড় ছেলে মাকসুদ মোল্লা, যিনি শশীভূষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং তার স্ত্রী কহিনুর বেগম, একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা—দুজনেই—দীর্ঘদিন ধরে মায়ের ভরণপোষণ দেন না। এমনকি সম্পত্তির জন্য মারধরও করেন।
গত শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে মাকসুদ ও কহিনুর বহিরাগত লোকজন নিয়ে মুজিবনগর এলাকায় ফাতেমার ছোট ছেলে সফিকের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করেন। এ সময় সফিককে মারধর করা হলে মা ফাতেমা বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। পরে তাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মা বিবি ফাতেমার অভিযোগ, একমাত্র বড় ছেলে মাকসুদকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন তিনি। কিন্তু চাকরি পাওয়ার পর থেকেই মাকসুদ তার ছোট ভাই-বোনদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করে আসছে। প্রায়ই বাবা-মায়ের (ফাতেমা ও তার স্বামী) ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত সে। আট বছর আগে মাকসুদ তাদের দুজনকে ঘর থেকে বের করে দেয়।
তখন তারা মুজিবনগরের একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে কৃষক ছেলে সফিকের আশ্রয় নেন। সেই থেকে মাকসুদ বাবা-মায়ের কোনো খোঁজখবর রাখেননি, এমনকি কোনো ভরণপোষণও দেননি। কিছুদিন পর মাকসুদ সেখানেও গিয়ে সম্পত্তির দাবিতে বাবাকে মারধর করেন, যার ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান।
বিবি ফাতেমা বলেন, ‘গত শুক্রবার সকালে মাকসুদ তার স্ত্রী কহিনুরসহ বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে। তারা ছোট ছেলে সফিককে মারধর করে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও পিটিয়ে আহত করে।’
তার দাবি, আদালত যেন এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার করে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মাইনুল ইসলাম নাবিল সরমান জানান, মাকে মারধর ও পিতা-মাতার ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগে মাকসুদ ও তার স্ত্রী কহিনুরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিচারক স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই আগামী ২৮ জুলাই আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।’
এই মামলার বাদী হয়েছেন মা বিবি ফাতেমা।