যশোরে এক নারীকে স্ত্রী দাবি করে দুই ব্যক্তির মধ্যে হাতাহাতি ও টানাটানির ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানার সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। এর আগে বেলা ১১টার দিকে যশোর শহরের একটি অভিজাত হোটেল থেকে পুলিশ তাদের তিনজনকে হেফাজতে নেয়।
তারা হলেন, ফরিদপুর কানাইপুর থানার ভাটি কানাইপুর গ্রামের বিকাশ অধিকারী তার স্ত্রী সীমা অধিকারী ও সদর থানার শোভারামপুর এলাকার মৃত অবনী মোহন কুন্ডুর ছেলে পলাশ কুমার কুন্ডু। পুলিশ তাদের ১৫১ ধারায় আদালতে সোপর্দ করে। বিচারক তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশে দিয়েছেন।
বিকাশ অধিকারী জানিয়েছেন, তার ৩৬ বছরের সংসার সীমা অধিকারীর সাথে। তার শ্বশুরবাড়ি বর্তমানে ভারতে। দুই মাস আগে তার স্ত্রী সীমা ভারতে পিতার বাড়ি বেড়াতে যান। কিছুদিন পর বিকাশ অধিকারীও বেড়াতে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ি। ভারত থেকে একসঙ্গে ফেরার কথা ছিল তাদের। কিন্তু বাড়ির ভাড়াটিয়াদের পানির সমস্যার জন্য তিনি সীমাকে রেখে দুইদিন আগে দেশে ফিরে আসেন।
সোমবার শ্বশুরবাড়ি থেকে বিকাশ অধিকারীকে ফোনে জানানো হয়, সীমা দেশের উদ্দ্যেশে রওনা হয়েছে। বিকাশ মোবাইলে স্ত্রীর সাথে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে বিকাশ অধিকারী সোমবার বিকেলে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে গিয়ে সীমার দেশে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত হন। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে যশোর শহরের একটি অভিজাত হোটেলে সীমা অধিকারী ও পলাশ কুন্ডুকে একসাথে খুঁজে পান তিনি।
তিনি আরও জানান, ‘পলাশকে স্থানীয় লোকজন প্রতারক হিসেবে চেনে। তার দুইটি স্ত্রী আছে। আমার স্ত্রীর সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। সীমা ভারত গেছে জানতে পেরে পলাশও ভারতে যায়। আমি আগে দেশে ফেরার সুযোগে প্রতারক পলাশ আমার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে দেশে নিয়ে এসেছে। এখন তারা বিয়ে করেছে বলে দাবি করছে।’ তবে বিয়ের কাগজপত্র দেখাতে পারেনি পলাশ। তিনি সীমাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে চান।
পলাশ কুন্ডু জানান, সীমার সঙ্গে তার তিন বছরের সম্পর্ক। তারা দুজনে দেড় মাস আগে ভারতের তাঁরাপীঠ মন্দিরে বিয়ে করেছে। তবে বিয়ের আগে বিকশ অধিকারীকে বিচ্ছেদের ঘোষনা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে পলাশ।
সীমা অধিকারী জানান, বিকাশের সংসারে তিনি নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে পলাশকে বিয়ে করেছেন।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) কাজী বাবুল জানান, ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। থানায় দীর্ঘক্ষণ তাদের সঙ্গে কথা বলেও কোন সিন্ধান্তে পৌঁছানে যায়ানি। পরে তাদের ১৫১ ধারায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।