যশোরে জলাতঙ্কের টিকার মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের জন্য ৫ হাজার টিকার চাহিদাপত্র জমা দেওয়া হলেও বরাদ্দ মিলেছে মাত্র ৫০০। আগামি ৭-৮ ডিসেম্বরের মধ্যে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে টিকা শেষ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ফলে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা আক্রান্তদের ফার্মেসি থেকে উচ্চমূল্যে অ্যান্টি-র্যাবিস ও র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিন টিকা কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নভেম্বর মাসে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ২ হাজার ১৫০ জন জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছেন। আক্রান্তের মধ্যে পোষা কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন
যশোর শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কামড়ের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন শত শত নারী, পুরুষ ও শিশু টিকা নিতে হাসপাতালে আসেন। কিন্তু মাসের প্রথম সপ্তাহে টিকা শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেক মানুষ বিনামূল্যে টিকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালের ভ্যাকসিন না থাকার কারণে অনেককে বাইরে থেকে বেশি দামে টিকা কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের এমটিইপি আই নুরুল হক জানিয়েছেন, কুকুর ও বিড়ালের কামড়ের শিকার হয়ে প্রতিদিন ৮০ থেকে ৯০ জন হাসপাতালে টিকা নিতে আসেন। জলাতঙ্কের টিকা সাধারণত তিনটি ডোজে দেওয়া হয়।
প্রথম ডোজ কামড়ের পর যত দ্রুত সম্ভব দিতে হবে, দ্বিতীয় ডোজ ৭ দিনে এবং তৃতীয় ডোজ ২১ বা ২৪ দিনে দিতে হয়। প্রতি ভায়াল একদিনে চারজনকে দেওয়া সম্ভব।
তিনি আরও জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে ১৬০০, অক্টোবর মাসে ২১০০ এবং নভেম্বর মাসে ২ হাজার ১৫০ জন হাসপাতালে জলাতঙ্কের টিকা গ্রহণ করেছেন। রোগীদের বেশির ভাগই পোষা কুকুর বা বিড়ালের কামড়ের শিকার। কেউ কেউ কামড়ের পর বিড়ালকে নিয়ে সরাসরি টিকা কেন্দ্রে আসেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, নভেম্বর মাসের জন্য ৫ হাজার টিকার চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছিল, বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ৪০০। ওই মাসে ৯ দিনের মধ্যে টিকা শেষ হয়ে যায়।
ডিসেম্বর মাসের জন্য ৫ হাজার টিকার চাহিদাপত্রের বিপরীতে বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ৫০০। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চলতি সপ্তাহেই টিকা শেষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অর্থাৎ আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে বিনামূল্যে জলাতঙ্কের টিকা না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।


