ঢাকা সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

পলিথিন কারখানায় অভিযানে গিয়ে হুমকির মুখে পরিবেশ কর্মকর্তা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৬:৩৬ পিএম
এহসান পিপি’ নামের অবৈধ পলিথিন কারখানাটি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানায় অভিযান চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মুন্তাছির রহমান। অভিযানের সময় কারখানার মালিক শামীম হোসেন লোক জড়ো করে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন।

এ ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই কর্মকর্তা। সোমবার (৪ আগস্ট) ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।

আবেদনপত্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩ আগস্ট দুপুরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাট গোপালপুর এলাকার কলোনি পাড়ায় অবস্থিত ‘এহসান পিপি’ নামের একটি অবৈধ পলিথিন কারখানায় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মুন্তাছির রহমান।

অভিযানকালে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। সে সময় কারখানার মালিক শামীম হোসেন উপস্থিত ছিলেন না। তাকে ফোন দিয়ে ডেকে এনে নগদ ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয় এবং অবৈধ পলিথিন জব্দ করা হয়।

পরে বিকেলে জব্দ করা পলিথিন নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাক ও লেবার ডেকে আনা হয়। সে সময় জেলা প্রশাসনের অপর সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রসনজিৎ সাহার উপস্থিতিতে পলিথিনগুলো ট্রাকে তোলার সময় শামীম হোসেন স্থানীয় লোকজনদের ডেকে এনে হট্টগোল সৃষ্টি করেন।

এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সামনেই শামীম হোসেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মুন্তাছির রহমানকে প্রাণে মারার হুমকি দেন।

হট্টগোলের সময় কারখানার মালিক শামীম হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত, উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মী ও জনসম্মুখে অভিযোগ করেন যে, পরিবেশ অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা তার অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতি মাসে নির্দিষ্ট টাকা নিয়ে থাকেন। গত মাসে টাকা না দেওয়ায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

মাসোহারা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ মুন্তাছির রহমান দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত ও উপস্থিত লোকজনের সামনে তাকে হেয় করার জন্য এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এর আগেও কারখানা মালিক শামীম হোসেন তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সামনেই একাধিকবার তাকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছেন। বিষয়টি তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। তারা অনুমতি দিলে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রসনজিৎ সাহা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি জানান, এ বিষয়ে এডিএম স্যার সম্যকভাবে অবগত আছেন। তিনি বিস্তারিত বলতে পারবেন।

এদিকে জানা গেছে, স্থানীয়দের সহায়তায় আভিযানিক দলকে অবরুদ্ধ করে রাখলে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা সরে যায়। তখন তারা কারখানাটি সিলগালা করে অভিযানিক দলটিকে উদ্ধারপূর্বক ফিরে আসেন।