ঢাকা সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

মাছের আঁশ বিক্রি করে সফল হতে চান ইমরান

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম
মাছের আঁইশ থেকে আয়, উদ্যোক্তা ইমরানের নতুন দিগন্ত। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মাছ কাটার পর ফেলে দেওয়া আঁশ এখন রপ্তানি পণ্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চীনসহ বিভিন্ন দেশে এই আঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে মূল্যবান পাউডার, যা ব্যবহৃত হচ্ছে ওষুধ, প্রসাধনী ও খাদ্যশিল্পে। এই আঁইশের মাধ্যমে নিজ এলাকায় কর্মসংস্থান তৈরি করছেন জয়পুরহাটের এক তরুণ উদ্যোক্তা।

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পাচগ্রাম মৃধাপাড়ার মো. ইমরান হোসেন মাছের আঁশ সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনের মাধ্যমে গড়েছেন আয়বর্ধক এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এক সময় কুচিয়া মাছের ব্যবসায় জড়িত ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সৃজনশীল চিন্তা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আঁইশ দিয়ে শুরু করেন নতুন এই সম্ভাবনার যাত্রা।

ইমরান জানান, ‘তিনি স্থানীয় হাটবাজার থেকে মাছের উচ্ছিষ্ট আঁশ অল্প দামে সংগ্রহ করেন। এরপর সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করা হয়- শুকানো, চালুনিকরণ, অন্যান্য বস্তু ও ক্যালসিয়াম অপসারণ, শ্রেণিবিন্যাস এবং পরিশেষে আমদানিকারকের চাহিদা অনুযায়ী প্যাকেটজাত করা হয়। এরপর রপ্তানিকারকের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হয় এসব আঁশ 

এই কার্যক্রমে স্থানীয়ভাবে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রেও যুক্ত হয়েছে নতুন দিগন্ত। ইমরান বলেন, ‘আঁশ কিনতে খুব বেশি টাকা লাগে না। স্থানীয় বাজার থেকেই সংগ্রহ করি। এই উদ্যোগে এনজিও ‘এসো’ সার্বিক সহায়তা দিয়েছে। আমি আশাবাদী, মাছের আঁইশ থেকে ভবিষ্যতে ভালো আয়ের সুযোগ থাকবে।’

উদ্যোক্তাকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘এসো’ এবং পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। এসো-এর কৃষি ইউনিটের মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান বলেন, ‘মাছের আঁশ প্রক্রিয়াজাত করে কোলাজেন, জেলাটিন ও ক্যালসিয়ামজাতীয় উপাদান তৈরি সম্ভব। এসব উপাদান প্রসাধনী, ঔষধ ও খাদ্যশিল্পে বহুল ব্যবহৃত। এটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র।’

কালাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. তৌহিদা মোহতামিম বলেন, ‘ইমরানের মতো উদ্যোক্তারা মাছশিল্পকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন। তার এই উদ্যোগ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।’