আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন বিএনপির আন্দোলনের কারণেই সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে চাপে ফেলে কোনো অবাস্তব দাবি আদায় করা যাবে না।’
সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার দাখিল মাদ্রাসা মাঠে উপজেলা শ্রমিক দলের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে ধোবাউড়া জেলা পরিষদ ডাকবাংলো হলরুমে উপজেলার ইউপি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়ে তৃণমূলের বিভিন্ন সমস্যা শোনেন এবং সমাধানে দলীয় অঙ্গীকারের কথা জানান।
প্রিন্স বলেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন জাতিকে সবার আগে বিএনপিই দেখিয়েছে—একত্রিশ দফা সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিএনপি ওয়াক আউট নয়, বরং বুলেট গতিতে কাজ করবে।’
তিনি বলেন, ‘সংস্কারের নামে যদি কাউকে জোর করে কিছু মানতে বাধ্য করা হয় বিএনপি নিশ্চয়ই চুপ করে বসে থাকবে না। দেশের বৃহৎ, অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় দল হিসেবে বিএনপির মতামত উপেক্ষা করে কার্যকর ও টেকসই সংস্কার সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছোট ও নিবন্ধনহীন দলের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করা সরকারের উচিত নয়। বড় দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব অনেক বেশি। সে কারণেই আমরা অনেক ছাড় দিয়েছি। কিন্তু কেউ যদি অবাস্তব ও ভারসাম্যহীন কোনো কিছু চাপিয়ে দিতে চায়, তা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।’
দেশের উন্নয়নের জন্য ভালো সংস্কারকে বিএনপি স্বাগত জানাতে প্রস্তুত উল্লেখ করে প্রিন্স বলেন, ‘কিন্তু বিএনপিকে চাপে ফেলে কোনো অবাস্তব দাবি আদায় করা যাবে না। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন বিএনপির আন্দোলনের কারণেই সম্ভব হয়েছে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কারের ছাত্র আন্দোলনে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছিল। গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিএনপির আহ্বানে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এই প্রতিরোধের ফলে গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়, যা সরকার পতনের পথ সুগম করে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি বিগত ১৫ বছর ধরে আপসহীনভাবে লড়াই করে এসেছে। সেই ধারাবাহিকতায় আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে দলটি।’
শ্রমিকদলের সংগঠনকে সুসংগঠিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ধোবাউড়ায় শ্রমিক দলের প্রতিটি ইউনিট যেন সুসংহত ও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে, সেটাই এখন সময়ের দাবি।’
জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবু সাইদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিদুল হক মোহনের সঞ্চালনায় কর্মী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মফিজ উদ্দিন, ধোবাউড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক আযহারুল ইসলাম কাজল, সদস্য সচিব আনিসুর রহমান মনিক, যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন খান লিটন, ফরহাদ রব্বানী সুমন, আবদুল কুদ্দুস, আবদুল মোমেন শাহিন, বিভাগীয় শ্রমিক দলের সহসভাপতি শহীদুল ইসলাম শহীদ, এম আসাদউল্লাহ আসাদ, সৌমিক হাসান সোহাগ, যুগ্ম সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ সুজন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল গনি, দপ্তর সম্পাদক ফিরোজ নুন ও প্রচার সম্পাদক আল-আমিন জনি প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :