ঢাকা মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫

নেই ডাক্তার-যন্ত্রপাতি, চারঘাট হাসপাতাল থেকে ‘খালি হাতে’ ফিরছেন রোগীরা

মৌসুমী দাস, চারঘাট (রাজশাহী)
প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট ও যন্ত্রপাতি অচল থাকার কারণে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। রোগীরা বাধ্য হচ্ছেন বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে। যা অনেকের পক্ষে ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত ২৬ জুন দুপুরে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে শলুয়া ইউনিয়নের বামনদিঘী গ্রামের দবির উদ্দিনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে ইসিজি মেশিন নেই—বাইরে থেকে পরীক্ষা করিয়ে আনতে হবে। পরীক্ষা করিয়ে ফিরলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। 

দবির উদ্দিনের মেয়ে নাহিদা আক্তার বলেন, ‘হাসপাতালে যদি ইসিজি থাকত, হয়তো বাবাকে সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া যেত।’

এমন ঘটনা একটি নয়। প্রতিদিন শতাধিক রোগী আসলেও ইসিজি, এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্রপাতি থাকলেও সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে অচল। ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভাসহ প্রায় ৩ লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা এই হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও সেবা কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়েছে।

চিকিৎসক সংকটও তীব্র। ৩১টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত মাত্র ৭ জন চিকিৎসক। মেডিসিন, কার্ডিওলোজি, সার্জারি, ইএনটি, অর্থোপেডিক্স ও চক্ষু বিভাগে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। পরিচ্ছন্নতা কর্মী ৫ জনের মধ্যে রয়েছেন মাত্র ১ জন, আয়ার পদও শূন্য।

স্থানীয় বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘মেডিসিন ডাক্তার নেই, রাজশাহীতে যেতে হয়। প্রাইভেট ক্লিনিকের খরচ বহন করা সম্ভব না।’

শলুয়া এলাকার সাইফুল ইসলাম জানান, তার আহত ছেলেকে এক্স-রে করাতে বাইরে নিতে হয়েছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চারঘাট শাখার সভাপতি কামরুজ্জামান বলেন, ‘একসময় সেবায় সেরা ছিল চারঘাট হাসপাতাল। জনবল সংকটে এখন কার্যত বন্ধ হওয়ার পথে।’

চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক রেজা স্বীকার করেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য অভিযোগের বিষয়েও খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’