মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ১২:৪২ এএম

বাধ্য হয়েই অনিরাপদ রিকশায় চলাচল করছেন যাত্রীরা, বাড়ছে যানজট ও দুর্ঘটনা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ১২:৪২ এএম

অনিরাপদ রিকশায় চলাচল করছেন যাত্রীরা, বাড়ছে যানজট ও দুর্ঘটনা।    ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

অনিরাপদ রিকশায় চলাচল করছেন যাত্রীরা, বাড়ছে যানজট ও দুর্ঘটনা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

টাঙ্গাইল শহরে দিন দিন বেড়েই চলছে ফিটনেসবিহীন দ্রুত গতিসম্পন্ন ব্যাটারি ও মোটরচালিত রিকশার সংখ্যা। প্যাডেল চালিত রিকশার দেখা মেলেনা বললেই চলে। ব্যাটারি ও মোটরচালিত রিকশার গতি সাধারণ প্যাডেল চালিত রিকশার চেয়ে অনেক বেশি, কিন্তু ব্রেক করার সিস্টেম সাধারণ রিকশার মতোই, নেই কোনো লুকিং গ্লাস, সিগনাল লাইটও নেই। ফলে জরুরি মুহূর্তে ব্রেক করে এই ব্যাটারি-মোটর চালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। কোনো প্রকার ট্রেনিং ছাড়াই অদক্ষ চালকেরা চালাচ্ছেন এই রিকশা। যেখানে সেখানে সামনে-পিছনে না দেখে টার্নিং নিয়ে ফেলে, ফলে পেছনের যানবাহনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায় প্রায়ই। গতি অনুযায়ী রিকশাটি অনেক হালকা, মাঝে মাঝে দেখা যায় পিছনের চাকার এক্সেল ভেঙে অথবা সামনের চাকার ফর্ক ভেঙে রাস্তার মধ্যে দুর্ঘটনার শিকার হন যাত্রীরা।

টাঙ্গাইল পৌরসভার লাইসেন্স শাখা সূত্রে জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে টাঙ্গাইল পৌরসভা থেকে ৬,০০০ রিকশার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি লাইসেন্সের জন্য ফি নেওয়া হয়েছে ১,০০০ টাকা। এই লাইসেন্স রিকশার জন্য নেওয়া হলেও ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যাটারি ও মোটরচালিত রিকশায়, এটা পৌরসভার আইন অনুযায়ী নিয়ম বহির্ভূত। বিগত সময়ের মেয়র দায়িত্ব থাকাকালীন সময় থেকেই এভাবে চলছে বলে জানা যায়। কিছু কিছু রিকশার মালিকরা একই নামে ১০ টা অথবা এর চেয়ে বেশি লাইসেন্স নিয়ে রিকশা ক্রয় করে চালকদের কাছে ভাড়া দিচ্ছেন।

তবে রিকশার মালিকদের কাছ থেকে জানা যায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের কারণে বেশির ভাগ রিকশার লাইসেন্স ১৫,০০০-২৫,০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু পৌরসভার কোষাগারে জমা হয়েছে ১,০০০ টাকাই।

চালকদের জন্য দুই রকমের লাইসেন্স দেওয়া হয়, রিকশার চালক এবং ইজিবাইকের চালক। তবে এই চালক লাইসেন্স পেতে আবেদনকারীদের কোনো প্রকার পরীক্ষা দিতে হয় না। শুধু মৌখিকভাবে পৌরসভার লাইসেন্স শাখা থেকে রিকশা ও ইজিবাইক চালানোর কৌশল শেখানো হয়।

যেহেতু বড় সংখ্যক নিম্ন আয়ের মানুষের উপার্জনের মাধ্যম এই রিকশা, তাই হুট করেই এই মোটর চালিত রিকশা বন্ধ করা যায়নি। ২০২০ সালে টাঙ্গাইল শহরের যানজট ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে শহর ও শহরের আশেপাশের রিকশা তৈরির কারখানা বন্ধ করে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছিল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। পরবর্তীতে কারখানার মালিকরা নতুন করে রিকশা তৈরি করবেনা মর্মে লিখিত মুচলেকা দিয়ে কারখানার মালামাল সরিয়ে নেবার আবেদন করলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারখানার সিলগালা খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই আবার পুরোদমে হরহামেশাই রিকশা তৈরির কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানগুলো।

টাঙ্গাইল জেলা রিকশা ও ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, রিকশা ও ইজিবাইকসহ তাদের শ্রমিক রয়েছে প্রায় আট হাজার। শহরে ও শহরের আশেপাশে রিকশা ভাড়া দেয়ার কয়েকটি গ্যারেজ রয়েছে। চালকরা এসব গ্যারেজ থেকে রিকশা ভাড়া নিয়ে চালায়। কিছু কিছু গ্যারেজে ৪০-৫০ টি করে রিকশা রয়েছে। প্রতিটি রিকশার দৈনিক ভাড়া দিতে হয় ৪০০-৪৫০ টাকা। প্রতিটি রিকশার দাম ৯০-৯৫ হাজার টাকা। কিছু কিছু চালকের নিজেরও রিকশা আছে।

তিনি আরও জানান, মূলত প্যাডেল চালিত রিকশা স্টীল বডি করে বানিয়ে ব্যাটারি ও মোটর লাগিয়ে এই রিকশা তৈরি করা হয়। রিকশার গতি সাধারণ প্যাডেল চালিত রিকশার চেয়ে অনেক বেশি। বেশির ভাগ চালকরা রিকশা চালানোর কৌশল ভালোভাবে জানেনা। ফলে প্রতিনিয়ত যানজট ও দুর্ঘটনা বাড়ছে। পৌরসভা থেকে যাচাই-বাছাই ও ট্রেনিং ছাড়াই লাইসেন্স দেওয়া হয়। যদি পৌরসভা থেকে সঠিক যাচাই-বাছাই ও ট্রেনিং এর মাধ্যমে লাইসেন্স দেওয়া হতো তাহলে চালকদের দক্ষতা বাড়তো এবং প্যাডেল চালিত রিকশায় ব্যাটারি-মোটর লাগিয়ে যে রিকশাটি চালানো হচ্ছে, এর পরিবর্তে যদি মোটা চাকার ব্রেক সিস্টেম ভালো যে রিকশা রয়েছে, সেটার অনুমোদন দিলে দুর্ঘটনা কমতো। রিকশা তৈরির কারখানাগুলো প্রতিনিয়ত নতুন রিকশা তৈরি করে বিক্রি করছে। শহরের যানজট নিরসন করতে চাইলে নতুন রিকশা তৈরি বন্ধ করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যাত্রী জানান, শহরের প্রায় সব রিকশাই মোটর চালিত, ফলে নিরুপায় হয়েই অনিরাপদ রিকশায় চলাচল করছেন যাত্রীরা। শহর ও শহরের বাহিরের উপজেলা এবং জেলার বাইরে থেকেও চালকরা এসে রিকশা চালায় টাঙ্গাইল শহরে। তিনি আরও জানান, অনেক সময় জানা যায় ছিনতাইকারীরাও রিকশা চালকের ভেসে ঘোরাফেরা করে, যাদেরকে দেখে চেনার উপায় নেই। অনেক অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। পৌরসভা থেকে যদি সঠিক যাচাই-বাছাই করে চালকদের লাইসেন্স প্রদান করার সঙ্গে গলায় ঝুলানোর জন্য আইডি কার্ড প্রদান করতো, তাহলে ভালো হতো।

টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার টাঙ্গাইলের উপপরিচালক মো. শিহাব রায়হান জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার অনেক আগেই বিগত সরকারের আমলে এই রিকশার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোনো রিকশার লাইসেন্স দেওয়া হয়নি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!