ঢাকা বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

বাংলাদেশের ব্রিকস অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান হলেন সাইফুল

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ০২:৩১ এএম
ব্রিকস এর প্রধান প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্রিকস এর প্রধান প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। সাইফুল ১ জুলাই ১৯৮৪ সালে পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলায় জন্মগ্রহন করেন। শৈশবে তিনি তার নানা বাড়ি নারায়ণগঞ্জে থেকে পড়াশুনা সম্পন্ন করেন।

তিনি নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর উচ্চ ডিগ্রি লাভের জন্য বিদেশে পাড়ি জমায়। সেখানে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ডিগ্রী লাভ করেন।

এরপর আমিরাতে নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ডেভেলপমেন্ট কাজে যোগদান করেন। চাকরির পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বর্তমানে তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছে। তার মূলত অয়েল, গোল্ড, গ্যাস, রেস্টুরেন্ট ও বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে শেয়ার হোল্ডার রয়েছে।

তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ছিল। তার মা গৃহিণী। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি পরিবারের সবার বড় সন্তান। ছোট ভাই সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও ছোট বোন এমবিএ ডিগ্রী লাভ করেন।

ব্রিকস কমিউনিটি সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য, ব্যাংকিং সেক্টর প্রসারের লক্ষে কোন দেশে কি পরিমান অর্থ সহায়তা দিবে তার নির্ধারণ কমিটির অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। বর্তমানে ব্রিকস ১১০+ দেশের সাথে বানিজ্য সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে। সারা বিশ্বে ব্রিকস কমিউনিটি ব্যবসা বাণিজ্য, ব্যাংকিং সেক্টর প্রসারের লক্ষে ৩৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি ফান্ড রিজার্ভ রয়েছে।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশে New Development Bank এর শাখা স্থাপন করার জন্য ১ বিলিয়ন ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চলতি বছরে বাংলাদেশে ব্রিকস সম্মেলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্রিকসের বানিজ্য কমিনিউটির প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন- বাংলাদেশ ভূ-আঞ্চলিক দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। আমাদের সাথে বিশ্বের সকল দেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দেশকে অর্থশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোন দেশের দাসত্ব হয়ে নয়, মুক্ত বানিজ্য গড়ে তোলাই মূল লক্ষ্য। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা আসবে আমাদের দেশ থেকে আয় করে নিয়ে যাবে তা হতে পারে না, আমাদের দেশ থেকে রপ্তানিও করতে হবে ঐ সকল দেশগুলোতে। এই প্ল্যাটফর্মে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে দেশকে। বাংলাদেশের সাথে ব্রিকসের বানিজ্য দেশগুলোর সঙ্গে ভিসা প্রসেসিং সহজ করার জন্য ইতিমধ্যে কাজ চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, ব্রিক্‌স হলো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। এটি দশটি দেশের সমন্বয়ে গঠিত: —ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত, এই ছাড়া বিভিন্ন দেশ ব্রিকসের সাথে কাজ করে যাচ্ছে এবং যুক্ত হতে চাচ্ছে। এটি একটি বিনিয়োগ কৌশল গ্রুপ এবং পৃথিবীর সর্ববৃহৎ অর্থনীতি ব্লক জি৭-এর একটি প্রতিপক্ষ ও বিকল্প এবং অর্থনীতির দিক থেকে শক্তিশালী।

ব্রিক নামটি দ্বারা প্রথমে বিনিয়োগের সুযোগ তুলে ধরার একটি গ্রুপকে বুঝাতো। পরে গ্রুপটি একটি ভু-রাজনৈতিক ও ভু-অর্থনৈতিক ব্লকে পরিণত হয়, যেখানে সদস্য দেশের সরকার ২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছর আনুষ্ঠানিক সম্মেলনে যোগ দিত এবং বহুপাক্ষিক নীতি সমন্বয় করত। ব্রিক্‌স এর মধ্যকার সম্পর্ক প্রধানত হস্তক্ষেপ-হীনতা, সমতা, এবং পারস্পরিক সুবিধার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।

এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য দেশ – ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং চায়নার নেতারা ব্রিক নামে ২০০৯ সালে তাদের প্রথম সম্মেলন করে। সাউথ আফ্রিকা ২০১০ সালে যোগ দেয়ার পর ২০১১ সালে প্রথম সম্মেলনে যোগ দেয় এবং সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ব্রিক্‌স। ইরান, মিশর, ইথিয়োপিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০২৪ সালে রাশিয়ায় তাদের প্রথম সম্মেলনে যোগ দেয়। নতুন সদস্য যোগ দেয়ার ফলে অনানুষ্ঠানিকভাবে নামের সংক্ষিপ্ত রূপ ব্রিক্‌স+ হয়ে যায়। সর্বশেষ যোগ দেয়া দেশটি হলো ইন্দোনেশিয়া।