‘ত্যাগ, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ব’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে আয়োজিত ‘শাহী কোরবানি ফিস্ট ২০২৫’ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বাকৃবি শাখা।
শনিবার (৭ জুন) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে কোরবানির মাংস দিয়ে ওই মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।
এর আগে শাখা শিবিরের উদ্যোগে ৩টি গরু ও ১টি খাসি কোরবানি দেওয়া হয়। শিবির আয়োজিত ফিস্টের মূল উদ্দেশ্য ছিল কোরবানির ত্যাগের শিক্ষাকে ধারণ করে ক্যাম্পাসের সকল স্তরের মানুষ এবং পার্শ্ববর্তী অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়া।
এ বিষয়ে ছাত্রশিবির, বাকৃবি শাখার প্রচার ও ছাত্র অধিকার বিষয়ক সম্পাদক ইউনুস বিন হোসাইন খান জানান, ‘এই ফিস্টের জন্য মোট ৩টি গরু ও ১টি খাসি কোরবানি করা হয়েছে। কোরবানি সম্পন্ন হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অপেক্ষাকৃত অসচ্ছল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আশপাশের এলাকার প্রায় ৪৫০ পরিবারকে কোরবানির মাংস দেওয়া হয়েছে।’
বাকৃবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবু নাসির ত্বোহা বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা আজ ঈদের এই পবিত্র দিনে ঈদুল আজহার আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাকৃবিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করতে পেরেছি। এই দিনটি আমাদের জন্য কেবল আনন্দ ও উৎসবের দিনই নয়, বরং এটি আমাদের ত্যাগ, আনুগত্য, আত্মসমর্পণ ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সবসময় চেষ্টা করে শিক্ষার্থীদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও ইসলামী মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে। এই আয়োজন—এই মধ্যাহ্নভোজ—তারই এক ছোট্ট বহিঃপ্রকাশ। আমরা চাই, এই ভোজ শুধু পেটের খাদ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে, অন্তরের বন্ধনকেও দৃঢ় করুক। কোরবানির মহান আদর্শকে সামনে রেখে আমরা চাই, আমাদের প্রতিটি কার্যক্রমে থাকুক ইখলাস, ত্যাগের মানসিকতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির আকাঙ্ক্ষা।’
ত্বোহা আরও বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমরা যেন ভুলে না যাই, আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত। তাই আমাদের দায়িত্ব হলো—ঈদের আনন্দ শুধু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, তা সমাজের সকল মানুষের দিকেও ছড়িয়ে দেওয়া। কোরবানির প্রকৃত শিক্ষা হলো—আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটি উৎসর্গ করার মানসিকতা অর্জন করা।
তিনি বলেন, আমরাও চাই, নিজেদের সময়, মেধা, শ্রম ও সামর্থ্যকে ইসলামের পথে, মানবতার কল্যাণে, প্রিয় মাতৃভূমিকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে উৎসর্গ করতে। আসুন, আমরা ঈদের এই পবিত্রতা নিয়ে এগিয়ে যাই, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সংকল্প করি এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক হিসেবে নিজেকে আরও পরিশীলিত ও নিবেদিতপ্রাণ করে গড়ে তুলি।’
আপনার মতামত লিখুন :