১৭ বছর বয়সে ১৯৯০ সালের বলিউডে পা রেখেছিলেন পাকিস্তানের কন্যা সোমি আলি। চোখে ছিল বড় বড় স্বপ্ন। তবে বড় অভিনেত্রী হওয়ার নয়, ছিল প্রেমের। সেই প্রেম কীভাবে ছারখার করে দিল তাঁর জীবন, তা সোমি প্রথমে বুঝতে পারেন নি।
বলিপাড়াসহ অনেকেই জানেন, সোমি বলিউডের `ভাইজান` খ্যাত সালমান খানের প্রাক্তন প্রেমিকা ছিলেন। সালমানের বিরুদ্ধে সোমির ভয়াবহ অভিযোগ চমকে দিয়েছিল সবাইকে।
সোমি জানান, তিনি যেমন ভালবাসতে চেয়েছিলেন তেমনি ভালবাসা পেতেও চেয়েছিলেন। ৩১ বছর পর এক সাক্ষাৎকারে সোমি জানান, তিনি এখন ভাল আছেন। পূর্বের ঘটনার জন্য এখন তার অনুতাপ নেই। তবে বলিউডে এসে তাঁকে যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছিল, ভাবলে এখনও গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তাঁর। তাঁর কথায়, ‘আমার বয়স তখন মাত্র ১৭ বছর। জানতামই না আমায় ব্যবহার করা হচ্ছিল কীভাবে!’
সোমি জানান, তাঁর প্রাক্তন বলেছিলেন, বলিউডে একমাত্র পুরুষরাই যত খুশি প্রেম করতে পারে, এক রাতের জন্য সঙ্গী বাছতে পারে। তবে তা মেয়েরা পারেনা। এতে অবাক হয়েছিলেন সোমি। এর থেকেই গন্ধ পান বিশ্বাসঘাতকতার।
সোমির অভিযোগ, শুধু মানসিক নয়, শারীরিক নির্যাতন করেছেন সালমান। তাঁর প্রতি সেই অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে ১৯৯৯ সালে সালমানের সঙ্গে যখন তাঁর বিচ্ছেদ হয় তখন পাকিস্তানে ফিরে যান সোমি। সালমান এরপর ঐশ্বর্য রাইয়ের সঙ্গে প্রেম করা শুরু করেন।
নির্দিষ্ট ঘটনার কথা স্মরণ করে সোমি একটি মুহূর্ত বর্ণনা করেছিলেন, যখন সালমান তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করছিলেন। সেসময় গৃহ সহায়িকা দরজায় ঘা দিয়ে থামানোর চেষ্টাও করেছিলেন। আরেকবার তাঁর ওপর সালমানের অত্যাচারের কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলেন সোমি।
এরপর কোমরে অসহ্য ব্যথা নিয়ে বিছানায় পড়েছিলেন সোমি। তবুও সালমান তার খোঁজও নেননি। সোমি আরও বলেন, একমাত্র তাঁর মা এবং কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধুই সালমানের সঙ্গে তাঁর প্রকৃত অভিজ্ঞতার কথা জানতেন।
বর্তমানে সোমি একটি বই লিখছেন। সেখানে সালমানের সঙ্গে তাঁর অতীত অভিজ্ঞতার অনেক কথাই বর্ণনা করে যেতে চান।
সোমিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সঙ্গীতা বিজলানি বা ক্যাটরিনা কাইফের মতো প্রাক্তন প্রেমিকাদের সঙ্গে সালমান এত ভাল বন্ধুত্ব বজায় রাখেন যেখানে, তাঁর সঙ্গে কথা নেই কেন? সোমির জবাব, ‘আমার সঙ্গে সালমানের যা হয়েছিল তা কারও সঙ্গে হয়নি যে! আমি যা সহ্য করেছি তার অর্ধেকও সঙ্গীতা বা ক্যাটরিনাকে নিতে হয়নি।’
বর্তমানে সোমি একটি NGO চালান, যার নাম ‘No More Tears’, এই সংস্থা গৃহে হিংসা, নারী নির্যাতন এবং মানবপাচার রুখতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে প্রযোজক, লেখক, পরিচালক ও অভিনেতা হিসেবেও কাজ করছেন সোমি। তবে তাঁর জীবনে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল শান্তির খোঁজ।