অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু সাধারণত আক্রান্ত প্রাণীর শরীর থেকে ছড়ায়। এমনকি জীবাণুটি মাটিতেও দীর্ঘদিন সক্রিয় অবস্থায় থাকতে পারে। কেউ যদি অসুস্থ গবাদিপশুর মাংস খান কিংবা শ্বাসের মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে, তবে তার মধ্যে এ রোগ দেখা দিতে পারে। ত্বকে ক্ষত থাকলে সেই অংশ দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে।
তবে মানুষের হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় না, যা অন্যান্য অনেক সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে দেখা যায় না।
উপসর্গ কী কী?
অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নির্ভর করে জীবাণুটি দেহে কীভাবে প্রবেশ করেছে তার ওপর। মাংস খেয়ে আক্রান্ত হলে বমি, পেটব্যথা, মাথাব্যথা, রক্তবমি, ক্ষুধামান্দ্য, জ্বর, গলাব্যথা, ঘাড় ফুলে যাওয়া এবং রক্তমিশ্রিত পাতলা পায়খানার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হলে শুরুতে সাধারণ সর্দি-জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।যেমন: গলাব্যথা, ক্লান্তি, পেশি ব্যথা। পরবর্তী সময়ে হতে পারে বুকে অস্বস্তি, শ্বাসকষ্ট, কফের সঙ্গে রক্ত, এবং জ্বর বেড়ে যেতে পারে। কখনো মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং রক্তচাপ হ্রাস পাওয়ার মতো জটিলতা দেখা দেয়।
ত্বকের মাধ্যমে সংক্রমিত হলে আক্রান্ত স্থানে পোকার কামড়ের মতো ফোলাভাব ও চুলকানি হয়, যা পরে ব্যথাহীন কালো দাগে রূপ নেয়। আশপাশের ত্বক ফুলে যেতে পারে এবং সঙ্গে জ্বরও থাকতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
এই রোগ প্রতিরোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। যেমন:
১) এমন মাংস খাবেন না যা ভালোভাবে সেদ্ধ করা হয়নি।
২) ত্বকে কাটাছেঁড়া থাকলে কাঁচা মাংস নাড়াচাড়া করার সময় গ্লাভস ব্যবহার করুন।
৩) গবাদিপশুকে নিয়মিত অ্যানথ্রাক্সের টিকা দিন।
৪) অসুস্থ গরুর মাংস খাওয়া, কাটাকাটি করা বা সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকুন।
৫) পশুর দেখাশোনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।
সচেতনতা ও দ্রুত চিকিৎসাই অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো চিকিৎসা শুরু হলে এ রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।