ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫

চাল-চাতুরি, সিঙ্গাপুর থেকে কিনবে সরকার, পাকিস্তানও পাঠাবে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

চাল নিয়ে হাতবদলের খবর পাওয়া গেছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারতের চাল সিঙ্গাপুরের মধ্যস্থতায় কেনা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ খবর প্রকাশের পর জানা গেছে, বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্যে একটি টেন্ডার আহ্বান করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পাঠানো এই চালেও ভারতীয় চাল থাকতে পারে বলে ধারণা করছে বিশ্লেষকরা।

সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ সিঙ্গাপুর থেকে চাল কেনার প্রসঙ্গে বলেন, বাজার ‘স্থিতিশীল রাখতে’ সরকার সিঙ্গাপুরের মধ্যস্থতায় ভারত থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, ‘চালের দাম কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে, আবার কিছুটা বাড়ছে। অতএব কোনোক্রমেই যেন চালের দাম না বেড়ে যায়, সেজন্য আমরা নন-বাসমতি চাল আবার আনব।’

উপদেষ্টার তথ্য অনুযায়ী, এই ক্রয় কার্যক্রমে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৬ কোটি ৪৩ লাখ ৮৭ হাজার ৭৪৫ টাকা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্যাকেজ-০৬ এর আওতায় এই ক্রয় কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে। সিঙ্গাপুরের এস্‌ অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যস্থতায় এ চাল কেনা হবে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্যে পাকিস্তানের ট্রেডিং করপোরেশন (টিসিপি) একটি টেন্ডার আহ্বান করেছে।

এতে বলা হয়েছে, দশকের পর দশক ধরে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের পর ২০২৪ সালের আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পাকিস্তান ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে চাল কেনার এই দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামী ২৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা নির্ধারণ করেছে টিসিপি। ২০ নভেম্বর প্রকাশিত টিসিপির ওই দরপত্রের নথি ডন দেখেছে।

দরপত্রের প্রস্তাবকারী কোম্পানি, পার্টনারশিপ ও একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে ‘আলাদা সিল করা দরপত্র’ আহ্বান করেছে টিসিপি। প্রতিষ্ঠানটি ১ লাখ টন লম্বা দানার সাদা চাল (আইআরআরআই-৬) কিনবে। পরে তা প্যাকেটজাত করে করাচি বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি করা হবে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রটার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানি চালকে বাংলাদেশের আমদানি সরবরাহ ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা হিসেবে এই দরপত্রকে দেখছেন।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি বাংলাদেশ যে চাল কিনেছে, তার কিছু অংশে ভারতের উৎপাদিত চাল ব্যবহৃত হতে পারে।

চালের এই ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, সিঙ্গাপুর থেকে কেনা চাল ভারতীয়—আবার পাকিস্তান বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য যে চাল কিনবে, সেটিও ভারতীয়। ফলে ঘুরেফিরে ভারতীয় চালই বাংলাদেশে আসবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।