ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পাঁচ নৈবেদ্যে আজ পূজিত হবেন দেবী দুর্গা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫, ০৯:৩৭ এএম
দেবী রূপে সাজিয়ে পূজা করা হচ্ছে কুমারীকে।

বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা চলমান রয়েছে দেশজুড়ে। পঞ্চমীতে বোধন ও ষষ্ঠীতে আমন্ত্রণ-অধিবাসের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই মহোৎসবে আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পালিত হচ্ছে মহাষ্টমী। 

শাস্ত্রীয় নিয়মে আজ দেবী দুর্গার অর্চনা হবে অগ্নি, বায়ু, বস্ত্র, পুষ্প ও মাল্য—এই পাঁচ নৈবেদ্য দিয়ে। নারী-পুরুষ, শিশু ও প্রবীণ ভক্তরা নির্জলা উপবাসে দেবীর উদ্দেশে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করবেন। সন্ধ্যায় হবে ঐতিহ্যবাহী সন্ধীপূজা।

দিনের প্রধান আকর্ষণ কুমারী পূজা। এ পূজায় এক থেকে ১৬ বছর বয়সী অবিবাহিত, অজাতপুষ্পা সুলক্ষণা কুমারী বালিকাকে দেবীর প্রতীক ধরে পূজা করা হয়। হিন্দু শাস্ত্র মতে, শুদ্ধাত্মা কুমারীতে মাতৃরূপ উপলব্ধি করাই কুমারী পূজার মূল উদ্দেশ্য। শ্রী রামকৃষ্ণের বাণীতেও এর মাহাত্ম্য উল্লেখ রয়েছে।

ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে আজ হাজারো সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্ত ভক্তি ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এই পূজায় অংশ নিচ্ছেন। মিশনের তথ্য অনুযায়ী, মহাষ্টমীর মূল পূজা সকাল ৬টা ১০ মিনিটে শুরু হয়ে পুষ্পাঞ্জলি ১০টা ৩০ মিনিটে এবং কুমারী পূজা সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। মধ্যাহ্ন প্রসাদ বিতরণ হবে দুপুর ১২টায়। সন্ধিপূজা শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে এবং শেষ হবে সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিটে।

শাস্ত্রমতে কুমারী পূজার উৎপত্তি বানাসুর বা কোলাসুর বধের কাহিনি থেকে। ধারণা করা হয়, দেবতাদের আবেদনে দেবী মানবকন্যারূপে জন্ম নিয়ে কোলাসুরকে কুমারী অবস্থায় বধ করেন, সেখান থেকেই এই পূজার প্রচলন। ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে কুমারী পূজায় জাতি বা বর্ণভেদ নেই, তবে সাধারণত ব্রাহ্মণ কুমারী কন্যার পূজাই প্রচলিত।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীতে এবার ২৫৯টি মন্দির-মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা গতবারের তুলনায় সাতটি বেশি। সারা দেশে মন্দির-মণ্ডপের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৩৫৫টিতে, যা গতবারের চেয়ে প্রায় এক হাজার বেশি।

পর্যায়ক্রমে মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী ও মহানবমী পূজা শেষে আগামী ২ অক্টোবর মহাদশমীর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে এবং সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব।