বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৫, ০২:২৬ এএম

দেশি কাপড় বিদেশি ট্যাগে বিক্রি

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৫, ০২:২৬ এএম

দেশি কাপড় বিদেশি ট্যাগে বিক্রি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মার্কেটগুলো মুখর হয়ে উঠেছে ক্রেতাদের পদচারণায়। ঈদের এই মার্কেটে এগিয়ে রয়েছে নারীরা। ২০ রমজানের পর থেকেই ঈদের বাজার জমে উঠেছে বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা। 

অভিযোগ রয়েছে, এবারের ঈদ বাজারে দেশি কাপড়কে বিদেশি বলে ট্যাগ লাগিয়ে বিক্রি চলছে রাজধানীর নামিদামি ব্র্যান্ড থেকে বিভিন্ন শপিং মলে। জারিমানাও করেছে নানা সময়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে নানা প্রতিষ্ঠানে দেশি কাপড়কে মেড ইন ইন্ডিয়া ও মেড ইন পাকিস্তান বলে বিক্রি করা হচ্ছে। 

পণ্যগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে এমন দাবি করলেও কোনো কাগজপত্র নেই তাদের। বিদেশি দাবি করলেও বেশির ভাগই ডকুমেন্ট দিতে পারেনি। লাখো টাকা জরিমানাও করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

ধামমন্ডিতে শপিং করতে আসা তাসলিমা নিরা নামের এক ক্রেতা অভিযোগ করেন, ‘কাপড়, জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে ভ্যাট ফাঁকি অনেক বেড়েছে। ‘এক দাম’ লেখা বেশির ভাগ দোকানে ক্রেতাকে দেওয়া হচ্ছে না ভ্যাট চালান বা রসিদ। 

আমরা যারা সচেতন, ভ্যাটের রসিদ চাইলে তাদের আচরণ দেখে মনে হয় আমরাই অপরাধী। আমাদের কাছ থেকে ভ্যাটের টাকা কেটে রাখলেও কোনো রসিদ দেয় না। এরপর দেখা যায়, নানা স্থানে দেশি কপড় যেগুলো দেশেই প্রস্তুত, সেগুলোতে বিদেশি ট্যাগ লাগিয়ে ২০০ টাকার কাপড় বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকায়। বিভিন্ন সময়ে অভিযান চললেও সেগুলো পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করেন তিনি।  

ক্রেতা সবুর মিয়া স্বাদ রাজধানীর নিউমার্কেটের একটি ব্র্যান্ডের দোকান থেকে ২ হাজার ৬৫০ টাকায় একটি পাঞ্জাবি কেনেন। তাকে দেওয়া রসিদে দেখা যায়, দোকানি ভ্যাটের বিষয়টি উল্লেখ করেননি। রসিদটিতে ভ্যাট চালান ছিল না। 

ক্রেতার নামের ঘরে উল্লেখ করা হয়, ‘ওয়াকিং কাস্টমার’। রসিদে দেখা যায়, ২ হাজার ৯৫০ টাকার সেই পাঞ্জাবি ১০ দশমিক ১৭ শতাংশ ছাড় হিসাবে ৩০০ টাকা বাদ দিয়ে ২ হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। ক্রেতাসমাগমে জমে উঠেছে পোশাকের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আউটলেটগুলো। 

এদিকে রাজধানীর অন্যতম আবাসিক এলাকা বনশ্রীতে ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকায় রয়েছে পোশাকের নামিদামি ব্র্যান্ডের বেশ কিছু আউটলেট। এগুলোর মধ্যে সারা, লারিভ, আড়ং, কান্ট্রি বয়, ইজি, আর্টিসানের নাম শোনা যায় বেশি। ঈদ উপলক্ষে সবগুলো আউটলেটই জমজমাট। বিভিন্ন আউটলেট ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। 

সারা দেশে পরিচিত পোশাকের ব্র্যান্ড আড়ংয়ের শোরুমে দেখা গেছে ভিড়। শাড়ি, পাঞ্জাবি, ছোট বাচ্চাদের নানান বাহারি পোশাক পাওয়া যায় এই আউটলেটে। সেখানে কথা হয় বিক্রয়কর্মী নাজিম ইসলাম জিহাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবারের ঈদে আমাদের এই আউটলেটে বেচাকেনা অনেক ভালো। এরই মধ্যে আমাদের পাঞ্জাবি স্টক আউট হয়ে গেছে। নতুন করে আবার আসছে।’ 

জিহাদ বলেন, ‘পাঞ্জাবি ছাড়াও ছোট বাচ্চাদের অনেক রকম পোশাক রয়েছে। ১ হাজার ৩০০ থেকে শুরু করে লাখ টাকার ওপরে শাড়ির কালেকশন রয়েছে। বিক্রিও হচ্ছে ভালো।’এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ক্রেতারা আমাদের আউটলেট থেকে কিনে স্বাচ্ছন্দ্য ও মানে ভালো পায়- এ কারণে চাহিদা বেশি থাকে। তবে এখানেও ভ্যাটের কোনো রসিদ আমাদের দেয় না। 

আড়ংয়ে পোশাক কিনতে আসা বেসরকারি এক ব্যাংকের কর্মকর্তা মাহফুর রহমান বলেন, ‘আমাদের পছন্দের তালিকায় আড়ং সবার ওপরে থাকে। এ কারণে এখানে এসেছি। আজকে প্রথম ঈদের বাজার করতে বের হয়েছি। এখান থেকে আমি ও আমার ছেলের জন্য পাঞ্জাবি কিনব। 

আড়ংয়ের পাঞ্জাবি আমার কাছে অনেক পছন্দের। ঈদে সাধারণত আড়ং থেকে পাঞ্জাবি কিনে থাকি। তাই এবারও আসছি।’ আড়ংয়ের বিপরীতে আরেক ব্র্যান্ডের আউটলেট কান্ট্রি বয়। সেখানে দেখা যায় ক্রেতাদের অনেক ভিড়। এই আউটলেটের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) বাপ্পি দাস জানান, ‘এবারের ঈদে কেনাবেচা খারাপ না। ভালোই চলছে। তবে অন্যান্য ঈদের তুলনায় কিছুটা কম মনে হচ্ছে। যেহেতু এখনো সময় আছে, বিক্রি আরও বাড়বে।’

আরেক ক্রেতা আরাফাত বলেন, ‘পাঞ্জাবি ও শার্ট কিনব। দুটি আউটলেট ঘুরে এখানে এসেছি। পছন্দও হচ্ছে। আর দামও যে খুব উঁচু তাও নয়। সব মিলিয়ে আমার পছন্দ হয়েছে। 

আর্টিসানের বিক্রয়কর্মী আহমেদ সাঈদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘ঈদে ভালোই কেনাবেচা চলছে। আমাদের এখানে ছেলেদের টি-শার্ট, জিন্স প্যান্ট ভালো বিক্রি হচ্ছে। ছোট-বড় সব ধরনের পোশাক রয়েছে। তবে টি-শার্ট বেশি বিক্রি হচ্ছে। সারা দেশে দেশি পণ্য যেভাবে বিদেশি পণ্যের ট্যাগ দিচ্ছে, তাতে  আতঙ্ক বোধ করছি। টাকা দিয়ে কী কিনছি, তা নিয়ে এখন সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে।’

ইজির আউটলেটের ম্যানেজার রাকিব বলেন, ‘আমাদের এখানে পাঞ্জাবি ও টিশার্ট বেশি বিক্রি হচ্ছে। দামও যে খুব একটা বেশি তা নয়। ঈদের বাজার হিসেবে যেভাবে চলছে, তাতে খারাপ বলব না। ভালোই হচ্ছে।’

আসিফ আকমল নামের এক ক্রেতা জানান, প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে ব্র্যান্ডের শপগুলোতে আসা। তবে এবার মিডিয়ার মাধ্যমে যেসব সংবাদ দেখলাম, তাতে করে ব্র্যান্ড থেকে জামা-কাপড় কিনতে ভয় পাচ্ছি। গুলিস্তানে০ ব্র্যান্ড ট্যাগ লাগিয়ে বানিয়ে ফেলে ভারত বা পাকিস্তান। তবে, ঈদে তো কিনতেই হবে পরিবার ও স্বজনদের জন্য। 
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!