চলমান উত্তেজনার মধ্যে এবার আরব সাগরে পাকিস্তানের একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্ট সামরিক অভিযান চালিয়েছে ভারতের নৌবাহিনী।
শুক্রবার (৯ মে) ভোরে এই অভিযান পরিচালিত হয় বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠ সূত্র।
ভারতের একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এ অভিযান ছিল সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও লক্ষ্যনির্দিষ্ট। অভিযানে পাকিস্তানের বেশ কিছু উপকূলীয় নজরদারি পয়েন্ট ও সামরিক সন্দেহভাজন স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টার অভিযোগ তোলে ভারত। তাদের দাবি, পাকিস্তান থেকে ছোড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র জম্মু, আরএস পুরা, আরনিয়া, সাম্বা ও হিরানগর অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসে।
তবে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেগুলোর বেশিরভাগ সফলভাবে প্রতিহত করে। একইসঙ্গে পাঠানকোটে গোলাগুলির ঘটনা এবং রাজস্থানের জেসেলমেরে একটি ড্রোন আটকানোর কথাও জানানো হয়।
এই ঘটনার পর রাতেই চণ্ডীগড়, মোহালি, শ্রীনগরসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়, যা ‘ব্ল্যাকআউট’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান এই হামলার মাধ্যমে জম্মু, পাঠানকোট ও উধমপুরের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে আঘাত হানার চেষ্টা করেছিল। তবে প্রস্তুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
অন্যদিকে পাকিস্তান ভারতের এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সঙ্গে আলাপে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এখন গুজবের ঢেউ বইছে। যুদ্ধ না ঘটেই যুদ্ধের গল্প বানানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ভারত দাবি করেছে, পাকিস্তানের দুটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে, দুইজন পাইলট আটক হয়েছে, লাহোরে হামলা হয়েছে, এমনকি করাচি বন্দরে ভারতীয় নৌবাহিনী আঘাত হেনেছে। কিন্তু এসবের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এসব ভিত্তিহীন প্রচার কেবল বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে চালানো হচ্ছে।’
সাম্প্রতিক এই পাল্টাপাল্টি দাবি-প্রতিদাবির মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার আকাশ ও সমুদ্রপথে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।