ভারতের সীমান্তের কাছে প্রবল বর্ষণে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের তিনটি আন্তঃসীমান্ত নদী হঠাৎ ফুলে উঠেছে। পানির তীব্র চাপ সামাল দিতে বুধবার (২৭ আগস্ট) কর্তৃপক্ষ চেনাব নদীর কাদিরাবাদ বাঁধের তীররক্ষা অংশে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে নদীর চাপ কিছুটা কমলেও তলিয়ে গেছে বিশ্বের অন্যতম শিখ ধর্মীয় পবিত্র স্থান কর্তারপুর সাহিব।
ফ্রান্স২৪ জানায়, চেনাব, রাভি ও সুতলেজ নদীতে অস্বাভাবিক বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাঞ্জাব প্রদেশে জারি করা হয়েছে উচ্চ সতর্কতা। পাকিস্তানের প্রায় অর্ধেক মানুষ এ প্রদেশে বসবাস করে। লাখো মানুষ ও গবাদিপশুকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। দুর্যোগ কর্তৃপক্ষ বলেছে, অন্তত ২ লাখ ১০ হাজার মানুষ ইতোমধ্যে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র মাজহার হোসেন জানান, বাঁধের অবকাঠামো রক্ষায় ডানপাশের অংশ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জরুরি সতর্কতা জারি করে চেনাব, রাভি ও সুতলেজ নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের দ্রুত সরতে বলা হয়েছে।
কর্তারপুর মন্দিরে বন্যার পানি ঢুকে প্রায় ১০০ মানুষ আটকা পড়ে। তাদের উদ্ধারে পাঠানো হয়েছে পাঁচটি নৌকা। গুরু নানকের মৃত্যুস্থান হিসেবে শিখ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই মন্দির বিশেষভাবে পবিত্র।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারত উজানের বাঁধের জলকপাট খোলার আগে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে অগ্রিম নোটিশ দিয়েছিল। তবে ভারতীয় পক্ষ এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।
পাঞ্জাবের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রধান ইরফান আলি বলেন, ১৯৮৮ সালের পর এবার নদীর পানি প্রবাহ সবচেয়ে বেশি। তিনি সতর্ক করেছেন, রাত ও ভোরের মধ্যে বন্যার ঢল লাহোর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। চলতি মৌসুমি বর্ষণে পাকিস্তান ইতোমধ্যে ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জুন থেকে শুরু হওয়া বন্যা ও ভূমিধসে ৮০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন