ঢাকা মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫

জ্যামাইকায় ২৮২ কিমি বেগে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‘মেলিসা’

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৫, ১১:৪০ এএম
ক্যারিবীয় সাগর। ছবি - সংগৃহীত

ক্যারিবীয় সাগরে সৃষ্ট বিশ্বমানের শক্তিশালী ঝড় ‘হারিকেন মেলিসা’ দ্রুত শক্তি বাড়িয়ে ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ঝড়ের বাতাস ঘণ্টায় প্রায় ২৮২ কিমি (১৭৫ মাইল) বেগে বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) সতর্ক করেছে, ঝড়টি জ্যামাইকায় বিধ্বংসী বাতাস, প্রবল বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস নিয়ে আঘাত হানতে পারে। এরই মধ্যে হাইতি ও ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে চারজনের মৃত্যু ঘটেছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, মেলিসা ঝড়টি আগামী চার দিনে দ্বীপে ১০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি বয়ে আনতে পারে, যা সম্ভাব্য ভয়াবহ বন্যা এবং ভূমিধসের কারণ হবে।

জ্যামাইকার সরকার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে দ্বীপটিকে ঘোষণা করেছে এবং রাজধানী কিংস্টনসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এরই মধ্যে ৮৮১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যা সবার জন্য উন্মুক্ত ও বিনা মূল্যে।

নিম্নাঞ্চলের মানুষদের নিরাপদে আশ্রয়ে নেওয়ার জন্য স্কুলবাসসহ বিভিন্ন পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে টোল বুথ খোলা রাখা হয়েছে যাতে যানজট এড়ানো যায়।

জাতীয় বন্দরগুলো জাহাজ চলাচলের জন্য বন্ধ করা হয়েছে এবং দ্বীপের দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর- নরম্যান ম্যানলি (কিংস্টন) ও সাংস্টার (মন্টেগো বে)- কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ঝড়ের প্রভাবে এরই মধ্যে পশ্চিম জ্যামাইকাজুড়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন।

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিটি জ্যামাইকানকে অনুরোধ করছি- প্রস্তুত থাকুন, ঘরে থাকুন এবং আমাদের নির্দেশগুলো মানুন।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘আপনারা অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন, কারণ ঝড়ে যেকোনো মুহূর্তে তীব্র বাতাস, ভারি বৃষ্টি এবং আকস্মিক বন্যা হতে পারে।’

এদিকে দেশটির পানি ও পরিবেশ মন্ত্রী ম্যাথিউ সামুদা নাগরিকদের পরিষ্কার পানি সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

স্থানীয় আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, কিংস্টনের উপকূলরেখা ১৩ ফুট (৪ মিটার) পর্যন্ত উঁচু ঝড়ের ঢেউয়ের মুখোমুখি হতে পারে, যা বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর জন্য বিপজ্জনক। ঘূর্ণিঝড়টির গতির কারণে অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া এটি ভয়াবহ মানবিক সংকটও সৃষ্টি করতে পারে।

পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মেলিসা যদি তার শক্তি বজায় রাখে, তবে এটি হবে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানার প্রথম ক্যাটাগরি-৫ ঝড়, যা জ্যামাইকাকে ইতিহাসে সর্বাধিক শক্তিশালী ঝড়ের সম্মুখীন করবে।