পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য মুক্তহাতে দান করছেন অসংখ্য মানুষ। তৃণমূল কংগ্রেসের বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের প্রস্তাবিত এই মসজিদের নির্মাণে অনুদানের জন্য বসানো বাক্সগুলোর প্রায় সবকটিই এরই মধ্যে ভরে গেছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন হুমায়ুন কবির মোট ১১টি দানবাক্স বসিয়েছিলেন। জানা গেছে, রুপিভর্তি সব বাক্স জড়ো করা হয়েছে তাঁর বাড়ির তিনতলার একটি ঘরে।
নগদ ছাড়াও অনলাইন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও অর্থ জমা পড়েছে। সব নোট ও পয়সা গোনা হচ্ছে হুমায়ুনের বাড়িতেই। আনা হয়েছে রুপি গণনার যন্ত্রও।
এখন পর্যন্ত অনলাইনে ৯৩ লাখেরও বেশি রুপি জমা পড়েছে। আর চারটি বাক্স ও একটি বস্তা থেকে নগদে পাওয়া গেছে ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার রুপি।
পরবর্তী সময়ে আরও তিনটি বাক্সের রুপি মিলিয়ে মোট ১ কোটি ১০ লাখ রুপি জমা পড়েছে। বাকি দানবাক্সগুলো মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) গণনা হলে জানা যাবে মোট কত রুপি জমা পড়েছে।
এ বিষয়ে হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, যারা টাকা গুনেছেন, তারা কেউ তাঁর নিজের কিংবা দলের লোক নন। তাঁরা এই এলাকার মাওলানা ও ইমাম। টাকা গোনার পুরো প্রক্রিয়াটিই ফেসবুকে লাইভ করা হয়েছে। এছাড়া সিসি ক্যামেরার সামনে বাক্স থেকে টাকা বের করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তাঁর বাড়ির তিনতলায় একটি ভালো ঘর রয়েছে, যেখানে সুরক্ষিত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় রুপি গণনার কাজ চলছে। পুরো বিষয়টি লাইভ সম্প্রচার করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ রুপি দান করেছেন, তাঁদের টাকা যাতে অপচয় না হয়, সেই দায়িত্ব ট্রাস্টের। মানুষ যে আস্থা রেখেছেন, তার কোনো অমর্যাদা হবে না।
হুমায়ুন কবির আরও জানান, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী তাঁকে ফোন করে বলেছেন, এই মসজিদ নির্মাণে তিনি একাই ৮০ কোটি রুপির অনুদান দেবেন। এছাড়া আরও বহু মানুষ অনুদান দিচ্ছেন।
জানা গেছে, এই বাবরি মসজিদ নির্মাণে আনুমানিক ৩০০ কোটি রুপি খরচ হবে। আর এ পরিমাণ অর্থ জোগাড় হয়ে যাবে বলেই আশাবাদী হুমায়ুন কবির।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হুমায়ুন কবির। সেদিন মানুষের ব্যাপক ভিড় হয়েছিল। প্রায় ৪০ হাজার মানুষের জন্য শাহী বিরিয়ানির আয়োজনও ছিল। সেদিনই স্টিলের তৈরি ১১টি বড় দানবাক্স বসানো হয়।
হুমায়ুন কবির তাঁর অনুসারীদের মসজিদ নির্মাণে সহায়তার আহ্বান জানান। এরপর থেকেই একের পর এক অনুদান আসতে থাকে। তাঁর দাবি, মানুষ মন খুলে দান করছেন। দানের পরিমাণ কয়েক কোটি রুপিও ছাড়িয়ে যেতে পারে।



