ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। আর এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন স্বয়ং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটন যখন পারমাণবিক চুক্তির চেষ্টা চালাচ্ছে, তখনই এ তথ্য সামনে এলো।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলের এই হামলার পরিকল্পনার কথা নতুন গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানতে পেরেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যা একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এমন হামলা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে ইসরায়েলের বড় ধরনের বিচ্ছেদ ঘটাবে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে। ২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে উত্তেজনা এড়াতে চাইছে।
তবে কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, ইসরায়েলি নেতারা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। এমনকি, ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত হামলা চালাবে কি না—তা নিয়ে মার্কিন সরকারের মধ্যেও গভীর মতবিরোধ রয়েছে। ইসরায়েল কীভাবে এবং কখন হামলা চালাবে, তা সম্ভবত তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার ওপর নির্ভর করবে।
তবে এক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র-ইরান চুক্তির ফলে যদি ইরানের সব ইউরেনিয়াম অপসারণ না হয়, তাহলে হামলার সম্ভাবনা আরও বাড়বে।
সিএনএন গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে আরও বলেছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের প্রকাশ্য ও ব্যক্তিগত বার্তা, আড়ি পেতে পাওয়া যোগাযোগ বার্তা এবং ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে এ উদ্বেগ বাড়ছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এটি আসন্ন হামলার ইঙ্গিত দিতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান যদি পারমাণবিক চুক্তি করতে রাজি না হয়, তবে এই হামলা সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পাবে। ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বই নাকি মধ্যপ্রাচ্যে বিপদ ডেকে আনছে।
গত কয়েক মাসে বারবার পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ইরানের উপর চাপ বাড়িয়েছে ওয়াশিংটন। একাধিকবার তেহরানকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ট্রাম্প, পরমাণু চুক্তিতে রাজি না হলে নজিরবিহীন বোমা বর্ষণে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে ইরানকে। পাশাপাশি আলোচনায় বসার প্রস্তাবও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
যদিও ইরানও বুঝিয়ে দিয়েছে ধমকে-চমকে পরমাণু চুক্তিতে সই করানো যাবে না তাদের। এর মধ্যেই দিন দুয়েক আগে আমেরিকা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, তারা কিছুতেই ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হতে দেবে না! এই পরিস্থিতিতে ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে ইসরায়েলের হামলার সম্ভাবনার খবর গোটা বিশ্বকে ভাবাচ্ছে।