স্বাধীন ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের অংশ গাজা উপত্যকায় বর্বরোচিত গণহত্যা চালাচ্ছে দখলদার ‘ইসরায়েল’। বিধায় কট্টরপন্থী ‘ইসরায়েলে’র সঙ্গে দেশগুলোকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন আলবানিজ। এ সময় তিনি তেল আবিবের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত আলবানিজ বলেন, ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর গণহত্যার জন্য ইসরায়েল দায়ী।’ এই বক্তব্যে সভায় উপস্থিত অনেকেই করতালি দেন।
‘ইসরায়েল’ অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, দখলদার ‘ইসরায়েলে’র সঙ্গে জাতিসংঘের সদস্য সকল রাষ্ট্রের উচিত বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করা। সেইসঙ্গে কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা নৈতিক দায়িত্বও।
তবে আলবানিজের মন্তব্য নিয়ে ‘ইসরায়েলে’র কূটনৈতিক মিশন এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ভয়াবহ হামলার পর আত্মরক্ষার অধিকারের কথা বলে আসছে ‘ইসরায়েল’। তবে গাজায় চালানো নারকীয় গণহত্যার অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে ইহুদিবাদীরা।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের বিরুদ্ধ ইহুদি-বিরোধী পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে ‘ইসরায়েল’। এমনকি নতুন নীতিমালার অংশ হিসেবে এই কাউন্সিলের সঙ্গে সম্পর্কও ছিন্ন করেছে। ফলে কাউন্সিলের বৈঠকে ‘ইসরায়েলে’র কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
জাতিসংঘের নিযুক্ত স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের একজন ফ্রান্সেসকা আলবানিজ বৈঠকে তার সর্বশেষ প্রতিবেদন উপস্থাপন করছিলেন। সেখানে তিনি ৬০টিরও বেশি কোম্পানির নাম উল্লেখ করেন, যেগুলো গাজায় ‘ইসরায়েলে’র বসতি নির্মাণ ও সামরিক অভিযানকে সমর্থন দিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
আলবানিজ জাতিসংঘের কাউন্সিলকে বলেন, ‘আমি যা তুলে ধরছি তা শুধু একটি নামের তালিকা নয়, এটি একটি পুরো ব্যবস্থা এবং এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির বিপরীতে দাঁড়াতে হবে।’ তিনি রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, ইসরায়েলের ওপর পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিতে, সব বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত করতে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনে জড়িত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে।
এদিকে, সপ্তাহের শুরুতে জেনেভায় ইসরায়েলের কূটনৈতিক মিশন আলবানিজের প্রতিবেদনের কড়া সমালোচনা করে বলেছে, এটি ‘আইনি ভিত্তিহীন, মানহানিকর এবং তার দায়িত্বের স্পষ্ট অপব্যবহার’। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন তিনি আলবানিজকে বরখাস্ত করেন।