ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫

সৌদিতে ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘থাড’ চালু

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের থার্ড ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি- সংগৃহীত

সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত ‘টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স’ (থাড) শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

আরবি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আশরাক আল-আওসাতের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা মেহের।

সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জেদ্দা প্রদেশের বিমান প্রতিরক্ষা গবেষণা কেন্দ্রে আয়োজিত এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে থাড ব্যবস্থার প্রথম ইউনিট সক্রিয় করা হয়।

আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার করা এবং কৌশলগত এলাকাগুলোকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। এ ব্যবস্থা চালুর আগে সৌদি সেনাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণও আয়োজন করা হয়। 

থাড যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী প্রযুক্তি। এটি স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে প্রতিহত করতে সক্ষম। এটিই একমাত্র মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, যা বায়ুমণ্ডলের ভেতরে ও বাইরের লক্ষ্যবস্তুকে বাধা দিতেও সক্ষম। 

এদিকে মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকের বরাতে মেহের নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান ও ইয়েমেনের পাল্টা হামলার সময় থাড ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘ইসরায়েল’কে প্রতিরক্ষা সহায়তা দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার বৈশ্বিক থাড ক্ষেপণাস্ত্র মজুদের প্রায় ২০ শতাংশ ব্যবহার করেছে, তবু অনেক ক্ষেত্রে ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে সৌদি আরব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়েছে। বেশিরভাগ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা।

তবে আর কিছু হামলার জন্য সৌদি ও পশ্চিমা শক্তি ইরানকে দায়ী করেছে। ২০১৭ সালে হুতিরা রিয়াদ শহরের দিকে স্কাড ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, যা প্যাট্রিয়ট সিস্টেম দিয়ে প্রতিহত করা হয়।

২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আরামকোর আবকাইক ও খুরাইস তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে চালানো ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিশ্ব তেল সরবরাহে বড় ধাক্কা লাগে।

যদিও ওই হামলার দায় হুতিরা নেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলাটি উত্তর দিক থেকে চালানো হয়, যা হুতিদের সক্ষমতার বাইরে বলে দাবি করা হয়।

২০২২ সালের মার্চেও রিয়াদ ও তেল স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়, যার প্রযুক্তি ও গঠন ইরানি উৎসের বলে দাবি করে পশ্চিমা গোয়েন্দারা।

থাড ব্যবস্থা মোতায়েনের মাধ্যমে সৌদি আরব তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি ও সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা আরও জোরদার হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।