‘ইসরায়েলের’ প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। বুধবার (১৬ জুলাই) এ রায় দেন আইসিসি। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের আবেদন করার পাশাপাশি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অপরাধের তদন্ত স্থগিত করার জন্যেও আবেদন করেছিল ‘ইসরায়েল’। আদালত সেই আবেদনও গ্রহণ করেননি।
রায়ে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সংঘটিত অপরাধের ওপর আইসিসির এখতিয়ার নেই বলে ‘ইসরায়েলের’ যুক্তি আদালত প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং এটি পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই।
এ ছাড়া ‘ইসরায়েলের’ পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনকে তাদের মতামত পেশ করতে অস্বীকৃতি জানানোর অনুরোধও খারিজ করেছেন আদালত। রায়ে বলা হয়, আদালতের কাছে যথেষ্ট তথ্য রয়েছে এবং এর বেশি উপস্থাপনেরও প্রয়োজন নেই।
২০২১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি আইসিসি রায় দেন, ফিলিস্তিন রোম সংবিধির একটি পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র এবং আদালতের এখতিয়ার গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম পর্যন্ত বিস্তৃত, যেগুলো ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েল দখল করে রেখেছে। এরপর ৩ মার্চ আদালতের প্রসিকিউটর দপ্তর ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়ে সরকারিভাবে তদন্ত শুরু করে।
এরপর ইসরায়েল ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রোম সংবিধির ১৯(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আদালতের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে। ২১ নভেম্বর প্রি-ট্রায়াল চেম্বার নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল আপিল চেম্বার ইসরায়েলের আপত্তি খারিজের আগের এক প্রক্রিয়াগত রায় বাতিল করে বিষয়টি মূল চেম্বারে ফেরত পাঠান, যেখানে বুধবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হলো।
এই রায়ের ফলে ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ায় ‘ইসরায়েলি’ নেতাদের জবাবদিহির সম্ভাবনা আরও জোরালো হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।