পৃথিবীর ১৮৬টি দেশের মধ্যে একটি মাত্র দেশ খাদ্যে পুরোপুরি স্বয়ংসম্পূর্ণ। দক্ষিণ আমেরিকার ক্ষুদ্র দেশ ‘গায়ানা’ এই কৃতিত্ব অর্জন করেছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন ‘বিস্ময়কর’ তথ্য।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘নেচার ফুড’-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, গায়ানা একমাত্র দেশ, যেখানে দেশীয় উৎপাদন দিয়েই জনগণের সব খাদ্যচাহিদা পূরণ সম্ভব হচ্ছে।
৭টি প্রধান খাদ্য উপাদান যথা ফলমূল, সবজি, মাছ, মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন এবং শর্করার উৎস-প্রতিটি ক্ষেত্রেই গায়ানা নিজেদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়, গায়ানার কৃষি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনগণের চাহিদা পূরণে নিবেদিত। এর ধারাবাহিকতায় দেশটি এখন সাতটি খাদ্য উপাদানে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে।
জার্মানির গটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে গবেষণাটি পরিচালনা করেছে। গবেষকরা প্রতিটি দেশের খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ এবং নাগরিকদের পুষ্টির চাহিদা বিশ্ব প্রকৃতি তহবিল (ডব্লিউডব্লিউএফ)-এর ‘লাইভওয়েল ডায়েট’ মানদণ্ড অনুযায়ী বিশ্লেষণ করেছেন।
বিশ্বের মাত্র ২৪% দেশ পর্যাপ্ত সবজি উৎপাদনে সক্ষম, আর উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও শর্করার উৎপাদনে সফল দেশের সংখ্যা আরও কম। গবেষণায় দেখা যায়, বেশিরভাগ দেশই মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য বেশি উৎপাদন করলেও পুষ্টিকর উদ্ভিজ্জ খাদ্যে রয়েছে বড় ঘাটতি।
গায়ানার পর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে চীন ও ভিয়েতনাম। এ দুটি দেশ সাতটির মধ্যে ছয়টি খাদ্য উপাদানে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিশ্বে প্রতি সাতটি দেশের মধ্যে মাত্র একটি দেশই পাঁচটির বেশি উপাদানে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
উল্লেখ্য, গায়ানা দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ দেশ। ভেনেজুয়েলা, ব্রাজিল, সুরিনাম ও আটলান্টিক মহাসাগর দ্বারা পরিবেষ্টিত এ দেশের জনসংখ্যা ৮ লাখের কিছু বেশি।
বিস্তীর্ণ উর্বর কৃষিজমি, প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং অনুকূল জলবায়ুর কারণে দেশটির কৃষিখাত অনেক বেশি উৎপাদনক্ষম।