শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ১১:০২ পিএম

আলাস্কায় কেন হচ্ছে ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ১১:০২ পিএম

পুতিন, ট্রাম্প এবং জেলেনস্কি। ছবি- সংগৃহীত

পুতিন, ট্রাম্প এবং জেলেনস্কি। ছবি- সংগৃহীত

সাত বছর পর মুখোমুখি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সম্ভাব্য চুক্তিতে পৌঁছানোই এই বৈঠকের লক্ষ্য।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কার সবচেয়ে বড় শহর অ্যাঙ্কোরেজে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া বহুল প্রতীক্ষিত এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রশ্ন হলো, বিশ্বের অন্য কোনো শহর বাদ রেখে আলাস্কাকে কেন এই দুই প্রভাবশালী নেতার বৈঠকের জন্য বেছে নেওয়া হলো?

আলাস্কা বেছে নেওয়া কাকতালীয় নয়। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম প্রান্তের এই অঙ্গরাজ্যের জটিল ইতিহাস ও কৌশলগত অবস্থান রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের প্রতীক। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার অতীত সম্পর্কের সঙ্গে এর কৌশলগত ও প্রতীকী তাৎপর্য শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জড়িয়ে আছে।

আলাস্কার ইতিহাস

১৮’শ শতাব্দী থেকে রুশ উপনিবেশ থাকা আলাস্কা ১৮৬৭ সালে জার আলেকজান্ডার দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৭২ লাখ ডলারে বিক্রি করেন। বর্তমানে এটি দুই দেশের জটিল ইতিহাসের প্রতীক, যদিও ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর সম্পর্ক ভয়াবহভাবে অবনতি ঘটেছে।

দূরবর্তী এই ভূখণ্ড অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার জন্য শাসন করা কঠিন ছিল। বিক্রির সময় রাশিয়া অর্থনৈতিক সংকটে থাকায় এই সিদ্ধান্ত ইম্পেরিয়াল কোর্টে স্বাগত জানানো হয়।

বর্তমান সময়েও আলাস্কার বিক্রির মূল্য অনেকের কাছে হাস্যকরভাবে কম মনে হয় এবং চুক্তির আইনগত বৈধতা নিয়ে রাশিয়ায় নিয়মিত বিতর্ক হয়। একসময় পশম বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল আলাস্কা, যা পরবর্তীতে সোনা ও তেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডার হিসেবে প্রমাণিত হওয়ায় বিক্রিটিকে রাশিয়ার অনেক জনগণ আফসোসের চুক্তি হিসেবে দেখেন।

২০২২ সালের জুলাইয়ে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার সময়ে রাশিয়ায় দেশপ্রেমিক উন্মাদনার মধ্যে আবারও ‘আলাস্কার বিষয়’ সামনে আসে। রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ডুমার স্পিকার ভিয়াচেস্লাভ ভলোদিন আলাস্কাকে ‘বিতর্কিত ভূখণ্ড’ আখ্যা দিয়ে ‘ফিরিয়ে আনার ভূমি’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

তবে রুশ কর্তৃপক্ষ আসলে এটি পুনরুদ্ধারে আগ্রহী নয়। ২০১৪ সালে এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী যখন পুতিনকে আলাস্কা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি জবাব দেন, ‘আমার প্রিয়, আলাস্কা দিয়ে আপনি কী করবেন?’—এবং যোগ করেন, ‘ওটা খুব ঠান্ডা।’

কেন বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কা বেছে নেওয়া হলো:

পুতিনের জন্য আইনি সুরক্ষা:

২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ফলে তিনি বিশ্বজুড়ে অন্তত ১২৫টি দেশে গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির এখতিয়ার স্বীকার করে না, ফলে আলাস্কায় সম্মেলন আয়োজন পুতিনের জন্য সম্ভাব্য আইনি জটিলতা থেকে মুক্তি দেয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র গাজার যুদ্ধাপরাধ মামলায় আইসিসির পরোয়ানা থাকা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকেও অভ্যর্থনা জানিয়েছে।

কৌশলগত প্রতীকী ও ভৌগোলিক অবস্থান:

রুশ ভূখণ্ড ও আলস্কার মধ্যে রয়েছে বেরিং প্রণালী। আর এটির দূরত্ব মাত্র চার কিলোমিটার। রাশিয়ার এত কাছাকাছি এই অঙ্গরাজ্য দুই দেশের জটিল অতীত ও সম্ভাব্য কূটনৈতিক পুনরারম্ভের প্রতীক। একসময় রুশ ভূখণ্ড হওয়ায় আলাস্কা ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব ও ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের প্রতীকী মিলনস্থল।

নিরাপত্তা ও নির্জনতা:

সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসনে। এটি আলাস্কার সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি, যা মার্কিন বিমানবাহিনীর এলমেনডর্ফ ঘাঁটি ও সেনাবাহিনীর ফোর্ট রিচার্ডসনকে একত্র করেছে। এই দূরবর্তী সামরিক ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের আধুনিকতম যুদ্ধবিমান মোতায়েন রয়েছে এবং এটি সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে সক্ষম। ঠান্ডা যুদ্ধের শুরু থেকে এই ঘাঁটি এখনো মার্কিন উত্তরাঞ্চল প্রতিরক্ষা কাঠামোর মূল অংশ।

আর্কটিক গুরুত্ব:

আলাস্কা যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার আর্কটিক স্বার্থের মিলনস্থল, যা জাহাজ চলাচলের রুট থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক সম্পদের মজুদ পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে বৈঠক আয়োজন প্রচলিত কূটনীতির বাইরে গিয়ে আর্কটিক বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!