মানবাধিকার সংক্রান্ত উদ্বেগ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষুদ্র দেশ এসওয়াতিনিতে দ্বিতীয় দফায় নির্বাসন বিমান পাঠিয়েছে। দেশটির সরকার সোমবার (৬ অক্টোবর) নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তারা ১০ জন নির্বাসিত ব্যক্তিকে গ্রহণ করেছে, যাদের কেউই এসওয়াতিনির নাগরিক নন।
জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও পাঁচজন নির্বাসিত ব্যক্তিকে এসওয়াতিনিতে পাঠানো হয়েছিল। হোয়াইট হাউস জানায়, সর্বশেষ পাঠানো নির্বাসিতদের মধ্যে কেউ কেউ হত্যা ও ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তবে তাদের জাতীয়তা প্রকাশ করা হয়নি।
মার্কিন অভিবাসন আইনজীবী টিন থান নুয়েন জানিয়েছেন, নির্বাসিতদের মধ্যে ভিয়েতনামের তিনজন, ফিলিপাইনের একজন ও কম্বোডিয়ার একজন রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, তিনি সোমবার পাঠানো দুজনের প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং পূর্বে পাঠানো আরও দুজনের পক্ষে কাজ করেছেন। কিন্তু বর্তমানে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এক বিবৃতিতে নুয়েন বলেন, ‘আমি তাদের ফোন বা ইমেল করতে পারছি না। এমনকি স্থানীয় আইনজীবীর মাধ্যমেও যোগাযোগ সম্ভব নয়, কারণ এসওয়াতিনি সরকার আইনজীবীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে।’
মানবাধিকার সংস্থাগুলো এসওয়াতিনিতে পাঠানো প্রথম দফার নির্বাসিতদের প্রতি আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, নির্বাসিতদের একাকী কারাগারে রাখা হয়েছিল এবং আইনজীবীর সহায়তা পাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
আইনগতভাবে নিজ দেশে ফেরানো সম্ভব না হলে ক্রমেই ‘তৃতীয় দেশ’ ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই প্রক্রিয়ায় নির্বাসিতদের এমন দেশে পাঠানো হয় যেখানে তাদের কোনো নাগরিকত্ব বা সামাজিক বন্ধন নেই।
মানবাধিকার কর্মীরা এই নীতিকে ‘অমানবিক ও আইনি প্রক্রিয়ার পরিপন্থী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, এর ফলে নির্বাসিতরা এমন দেশে আটকা পড়ছেন, যেখানে ভাষা জানেন না, আইনি সহায়তা পান না এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকিতে থাকেন।
এসওয়াতিনির মানবাধিকার কর্মীরাও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের গোপন চুক্তির নিন্দা করেছেন এবং সেটি বাতিলের দাবিতে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন।
তবে এসওয়াতিনির সংশোধনাগার বিভাগ জানিয়েছে, তারা হেফাজতে থাকা সকল ব্যক্তির সঙ্গে ‘মানবিক আচরণ’ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর এবং তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো না হওয়া পর্যন্ত নিরাপদে রাখবে।
সূত্র: আল-জাজিরা