শনিবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মাইনুল ইসলাম রাজু, রাবি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ১২:১৮ এএম

রাবির দুই হল বেহাল, নিরাপত্তাহীন শিক্ষার্থীরা

মাইনুল ইসলাম রাজু, রাবি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ১২:১৮ এএম

রাবির দুই হল বেহাল, নিরাপত্তাহীন শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি আবাসিক হলে ‘ভগ্নদশা’ দেখা গেছে। হল দুটির ছাদের কংক্রিটের ঢালাইয়ের অংশ, দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা। সেখানের বিভিন্ন বাথরুমের মরিচা ধরা লোহার পাইপ থেকে চুইয়ে পড়ে দুর্গন্ধযুক্ত পানি। এ ছাড়া মাঝে মাঝেই দেখা দেয় বৈদ্যুতিক লাইনের গোলযোগ। সংকটের সমাধান করতে নির্বাচনের পরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)। এদিকে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টায় হল দুটি গত সোমবার দুপুরে পরিদর্শন করেছে কর্তৃপক্ষ।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা সব সময় ভয়ে থাকেন কোন জায়গা থেকে কংক্রিটের একটি অংশ খসে মাথার ওপর পড়ে। কয়েক দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রকল্পের ওপর তারা বিশ্বাস করতে চায়।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন হলেই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু হবে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

ভগ্নদশার হল দুটি হলোÑ শেরেবাংলা ফজলুল হক হল এবং মন্নুজান হল। দুটি হলই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমদিকে নির্মিত হয়েছে। দুইটি হলে ৯ শতাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী থাকেন।

হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিকেলে হঠাৎ মন্নুজান হলের ইলেকট্রিসিটির বক্স থেকে আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুনে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া নেভানো সম্ভব হলেও শিক্ষার্থীদের মাঝে নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি হয়। হলের বিভিন্ন ব্লক ও তলার বাথরুমগুলোর লোহার মরিচা ধরা পাইপ থেকে চুইয়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া হলের বিভিন্ন দেয়াল থেকে খসে পড়ে পলেস্তারা এবং মাঝে মাঝেই ছাদ থেকেও খসে পড়ে কংক্রিটের ঢালাইয়ের অংশ।

এ বিষয়ে মন্নুজান হল ছাত্রী সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) সুমাইয়া জাহান বলেন, আমাদের হলের পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। আমাদের হলের এই পরিস্থিতি হল কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। তারা হলের ভেঙে ও খসে পড়া জায়গাগুলোতে সিমেন্ট দিয়ে মেরামত করেছে। এতে দিনের পর দিন অবস্থা আরও ভয়াবহ হচ্ছে। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টির দ্রুত সমাধান প্রত্যাশা করছি।

অন্যদিকে শেরেবাংলা ফজলুল হক হলের অবস্থাও একই। হলের এই বেহাল দশায় কক্ষে থাকতে অনিরাপদ বোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এই হলের আবাসিক অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তারা বলেন, আমাদের হলের এই সংকট গত কয়েক বছর যাবৎ চলছে। একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ দেখা যায়নি। হলের শিক্ষার্থীরা সব সময় ভয়ে থাকেন কোন জায়গা থেকে কংক্রিটের একটি অংশ খসে মাথার ওপর এসে পড়ে। আমরা দেখে কয়েক দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। আমরা এই প্রকল্পের ওপর বিশ্বাস করতে চাই। এর আগে সাময়িকভাবেও কোনো একটা সমাধান হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরেবাংলা হল ছাত্র সংসদের কার্যনির্বাহী সদস্য সাহিব বিল্লাহ বলেন, আমাদের হলে একটি সাময়িক সংস্কারের জন্য একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। আমরা আলোচনা সাপেক্ষে সেটি বন্ধ করেছি। আমরা বলেছি একটা স্থায়ী সমাধান দিতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছিল। পরে আমাদের জানানো হয়েছে, নির্মাণাধীন কামারুজ্জামান হলের একটি অংশে এই হলের বর্তমান আবাসিক শিক্ষার্থীদের নেওয়া হবে। পরে বর্তমান হলের সংস্কার কার্যক্রম শুরু হবে।

হলের সংস্কারের জন্য একটি প্রাথমিক বাজেটও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সিন্ডিকেটের ৫৩৪তম সভায়। এই বাজেট একনেক বা পরিকল্পনা কমিশনে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হলেই শেরে বাংলা হলের কাজ শুরু হবে। তবে মন্নুজান হলের বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, গত সিন্ডিকেট সভায় আমাদের একটি উন্নয়ন প্রকল্প পাস হয়েছে। এটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বা একনেকে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পেলে নতুন ৬টি হল নির্মাণ হবে এবং শেরে বাংলা হল পুনর্নির্মাণসহ কয়েকটি কাজ করা হবে।

এদিকে সম্প্রতি হল দুটি পরিদর্শন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হল দুটির রান্নাঘর, ডাইনিং-ক্যান্টিন, পাঠকক্ষ, কমনরুম ইত্যাদি সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষকে হলের অবকাঠামোর বর্তমান অবস্থা নিরূপণ ও সে অবস্থার উন্নয়নে চাহিদা প্রণয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।

পরিদর্শনকালে শেরেবাংলা হলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ, হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ও হল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি মো. রানা হোসাইন এবং মন্নুজান হল পরিদর্শনকালে অন্যদের মধ্যে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোছা. আশীয়ারা খাতুন, হল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি সুমাইয়া জাহানসহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!