প্রাথমিক জরিপে দেখা গেছে, আক্রান্ত ৪১১টি গ্রামের মধ্যে মাত্র ৪৯টির তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। সেখানে ৫ হাজার ২৩০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ৬৭২টি। ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ৩৬২টি গ্রামে এখনো পৌঁছাতে পারেনি জাতিসংঘ। আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কুনার প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ৩৬২টি গ্রামে এখনো পৌঁছাতে পারেনি জাতিসংঘ। দেশটির দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে গত আগস্টের শেষ দিকে আঘাত হানা ৬ মাত্রার এ ভূমিকম্পে অন্তত ২ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে বহু গ্রাম। খবর আলজাজিরা। গত সোমবার জালালাবাদ থেকে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় কার্যালয়ের কর্মকর্তা শ্যানন ও’হারা বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকাগুলোয়’ ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে। যেখানে সহায়তা পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন।
প্রাথমিক জরিপে দেখা গেছে, আক্রান্ত ৪১১টি গ্রামের মধ্যে মাত্র ৪৯টির তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। সেখানে ৫ হাজার ২৩০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ৬৭২টি। ও’হারা বলেন, ভূমিকম্পের আগেও এসব গ্রামে পৌঁছানো কঠিন ছিল। এখন সেখানে পৌঁছাতে কঠিন পরিশ্রম প্রয়োজন। তিনি জানান, জালালাবাদে পৌঁছাতে তাদের দলের ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। অনেক গ্রামে পৌঁছাতে গাড়িতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটতে হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এ ভূমিকম্পে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে আড়াই লাখ শিশু। আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলে অনেক গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ও’হারা বলেন, ‘ভূমিকম্পকেন্দ্রের দিকে যেতে গিয়ে আমরা দেখেছি পরিবারগুলো বাস্তুহারা হয়ে সঙ্গে যা নিতে পেরেছে, তা নিয়েই হেঁটে যাচ্ছে।
অনেকে এখনো ভূমিকম্পের রাতের পোশাকেই ছিলেন। কারো কারো গায়ে সদ্য বাঁধা ব্যান্ডেজ।’ শীত আসন্ন হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি। অক্টোবরের শেষে বরফ পড়া শুরু হলে এসব পার্বত্য উপত্যকায় প্রবেশের পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। তালেবান কর্তৃপক্ষকে নারী সহায়তা কর্মীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ভূমিকম্পের পর নতুন বাস্তবতায় ওই আহ্বান জানিয়েছে তারা। আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে হয়ে যাওয়া ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ মানুষ মারা গেছেন। প্রচুর সহায়তার প্রয়োজন তালেবান সরকারের।
এ রকম একটি সময়ে আফগানিস্তানে নারী সহায়তা কর্মীরা পুরুষ অভিভাবক ছাড়া চলাচল করতে পারছেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে ওই বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে নারী সহায়তা কর্মীরা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের জন্য কাজ করতে পারেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফগানিস্তান দপ্তরের ডক্টর মুক্তা শর্মা জানান, সহায়তা কর্মীদের প্রায় ৯০ শতাংশ পুরুষ। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নারীরা পুরুষ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বস্তি অনুভব করেন ও ভয় পান। এ কারণে আরও নারী সহায়তা কর্মী প্রয়োজন। ১ সেপ্টেম্বরের ওই ভূমিকম্পে ও সেটির আফটারশকে ৩ হাজার ৬০০ বেশি মানুষ মারা গেছেন। হাজারও মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন