সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ১২:৫৫ এএম

গুলশানে চাঁদাবাজি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাসহ ৭ দিনের রিমান্ডে চারজন

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ১২:৫৫ এএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাসহ ৭ দিনের রিমান্ডে চারজন

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের গুলশানের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাসহ চারজনকে ৭ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া চারজন হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ এবং সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার বহিষ্কৃত আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন, সদস্য সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব।

গুলশান থানার আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই মোক্তার হোসেন জানান, এদিন আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান। গত শনিবার সন্ধ্যার পর গুলশান ২ নম্বরে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসার সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরের করা গুলশান থানার মামলায় ছয়জনকে আসামি করা হয়। গ্রেপ্তারদের বাইরে এক আসামি হলেন কাজী গৌরব অপু, যিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। অপর আসামি শিশু।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় আসামি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা রিয়াদ ও অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সাবেক এমপি শাম্মী আহম্মেদের বাসায় যান। তখন তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করেন।

টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর হুমকি দেন এবং টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে নিজের কাছে থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা ও ভাইয়ের কাছে থেকে নিয়ে আরও ৫ লাখ টাকা দেন।

এরপর ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিয়াদ ও অপু বাদীর বাসায় প্রবেশ করে তার ফ্ল্যাটের দরজায় সজোরে ধাক্কা মারেন। বিষয়টি গুলশান থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে জানানো হলে আসামিরা চলে যায়।
২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় আবার রিয়াদের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা বাদীর বাসার সামনে এসে তাকে খুঁজতে থাকেন। বাসার দারোয়ান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে বিষয়টি জানান। তখন আসামিদের দাবি করা বাকি ৪০ লাখ টাকা না দিলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন।  পরবর্তী সময়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হলে তাৎক্ষণিক গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচজনকে হাতেনাতে আটক করে।  এ সময় অন্য আসামি অপু পালিয়ে যান।

এদিকে গতকালকের রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন এই চারজনকে ‘কুলাঙ্গার’ আখ্যায়িত করে বলেন, এদের রাজনীতি করার ‘অধিকার নেই’।

তিনি বলেন, ‘ওদের এত কম বয়স, কেন ওদের কোটি কোটি টাকা দরকার?’
রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ মামলার রহস্য উদঘাটন, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার এবং ঘটনার সঙ্গে কোনো ‘গডফাদার’ জড়িত আছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।

এদিন ৪টা ৫ মিনিটের দিকে পাঁচ আসামিকে একটি প্রাইভেট কারে করে সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। তাদের সরাসরি সিএমএম আদালতের চারতলায় জিয়াদুর রহমানের আদালতে তোলা হয়। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন আইনজীবীরা। তারা তাদের সাজা দাবি করেন। কাঠগড়ায় রাখার সময় আসামিরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় ইব্রাহিম তার আইনজীবীকে বলেন, ‘আমরা চাঁদা চাইনি। সেখানে আওয়ামী লীগের দোসর আছে, এ কথা জানিয়ে পুলিশকে ফোন দিই। তারা বলে ফোর্স পাঠাচ্ছে, কিন্তু পাঠায়নি।’
সিয়াম বলেন, ‘আমরা ওই বাসায় যাইনি। নিচে দাঁড়িয়ে ছিলাম।’

বিকেল ৪টার পর বিচারক এজলাসে ওঠেন। তখন আদালতে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয় ও হৈচৈ শোনা যায়। পরে শুনানি করতে উঠে রাষ্টপক্ষের আইনজীবী শামছুদ্দোহা সুমন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে এই চক্রসহ বহু লোক ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, উত্তরাসহ অভিজাত এলাকায় কে, কোন এলাকায় অবস্থান নিচ্ছে তার খবর নিত। পরে ওই বাসায় গিয়ে চাঁদা দাবি করত। তারা নিজেরা চাঁদাবাজি করে তারেক রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন বিরূপ মন্তব্য করতেন। ওই বাসা সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের। তিনি বাসায় নেই। তার স্বামী ওই বাসায় থাকেন। তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। বিষয়টা এমন না যে বাকি দিনগুলো তারা চাঁদাবাজি করেননি। কত কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছে, তা রিমান্ডে নিলে জানা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানকে চাঁদাবাজ সাব্যস্ত করে তারা হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে চায়। সর্বোচ্চ রিমান্ডের প্রার্থনা করছি। এরা কুলাঙ্গার। এদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। ওদের এত কম বয়স, কেন ওদের কোটি কোটি টাকা দরকার।’

এ সময় বাদীপক্ষে কয়েকজন আইনজীবী বলেন, আগে এদের খাওয়ার টাকা ছিল না। এখন কোটি টাকার গাড়ি নিয়ে ঘোরে। তারা আশা করেন, চাঁদাবাজদের পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াবেন না।

আসামিদের পক্ষে আইনজীবী আব্দুল কাদের ভূঁইয়া রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে তাদের জামিন আবেদন করে বলেন, ‘চাঁদাবাজ, অন্যায়ের পক্ষে কেউ থাকতে পারে না। আমার একটাই বক্তব্য, ওই বাসায় যাওয়ার আগে ওনারা (আসামিরা) থানায় ফোন দিয়েছিলেন। যদি পুলিশকে ফোন দিয়ে থাকেন, তাহলে বিষয়টা ভিন্ন। আমরা চাঁদাবাজমুক্ত একটি সুন্দর পরিবেশ, আমাদের সন্তানের জন্য চাই।’
শুনানি শেষে আদালত চারজনের সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!