ঢাকা রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

পরকীয়ার অভিযোগ রাজবাড়ীতে প্রবাসীর স্ত্রী ও গৃহশিক্ষককে নির্যাতন

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ০১:১৪ এএম

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের হরিণবাড়িয়া গ্রামে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে এক প্রবাসীর স্ত্রী ও গৃহশিক্ষককে মধ্যযুগীয় কায়দায় খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে।

ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে। নির্যাতনের শিকার গৃহশিক্ষককে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠালেও পরবর্তী সময়ে তার কোনো খোঁজ মেলেনি। একইভাবে নিখোঁজ রয়েছেন ওই প্রবাসীর স্ত্রীও।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হরিণবাড়িয়া গ্রামের সমসের নামের এক যুবক স্থানীয় এক প্রবাসীর বাড়িতে গৃহশিক্ষক হিসেবে পড়াতে যেতেন। ধারণা করা হয়, প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শুক্রবার বিকেলে সমসের ওই বাড়িতে প্রবেশ করলে স্থানীয় কয়েকজন যুবক ও কিশোর তাদের ঘর থেকে ধরে এনে বাড়ির বারান্দার বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ২ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন কিশোর ঘরের দরজায় কড়া নাড়ছে। দরজা খোলার পর এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি প্রবেশ করে গৃহবধূ ও গৃহশিক্ষককে ঘর থেকে টেনে বের করে। এরপর তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু হয়।

দ্বিতীয় আরেকটি ৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, গৃহবধূ ও গৃহশিক্ষককে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে হাত ও কোমর বেঁধে রাখা হয়েছে। আহত গৃহশিক্ষককে তখন প্রায় অচেতন অবস্থায় দেখা যায়। আশপাশে অন্তত অর্ধশত মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন গৃহবধূর মাথার ওড়না টানার মতো লজ্জাজনক আচরণও করেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনার ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তিকে এক কিশোর বলছে, ‘আমরা বাইরে বসে ছিলাম। স্যার ঘরে ঢোকার পর কিছুক্ষণ জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়। পরে দরজা খুলতে না চাওয়ায় আমরা তাদের বের করে এনেছি।’

স্থানীয়রা জানান, নির্যাতনের পর আহত গৃহশিক্ষক সমসেরকে একটি ভ্যানে করে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও অভিযুক্তরা সবাই পালিয়ে যায়।

কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ স্থানীয়দের এমন নৃশংস ও আইনবহির্ভূত আচরণে এলাকায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।