রাজশাহীতে জুলাইযোদ্ধাদের জন্য ভাড়া করার বিশেষ ট্রেন পছন্দ না হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকাগামী ছাত্র-জনতা। এদের একাংশ রেললাইনের ওপরে বসে পড়েন। কেউ আবার শুয়ে পড়েন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় রাজশাহী থেকে ট্রেন চলাচল প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে তাদের শান্ত করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। জুলাইযোদ্ধারা বনলতা ও সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো আন্তঃনগর ট্রেন হবে বলে আশায় ছিলেন। কিন্তু বরাদ্দ করা বিশেষ ট্রেনটি ছিল অন্য ট্রেন। এ নিয়ে যারা ট্রেনে উঠে পড়েছিলেন তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বাগবিত-া হয়। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা অন্যদের তোপের মুখে টিকতে না পেরে রেললাইন ছেড়ে দেন। পরে ৩৫ আন্দোলনকারীকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সিল্কসিটি ট্রেনে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজশাহী থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য জুলাইযোদ্ধাদের ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯১ টাকা ভাড়া দিয়ে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই ট্রেনে ৫৪৮টি আসন রয়েছে। বিভিন্ন স্টেশনে তাদের উঠার কথা। তবে রাজশাহী স্টেশন থেকে ২০০ থেকে ২৫০ জন যাত্রী ওই ট্রেনে ঢাকায় গেছে। এই ট্রেনটি সকাল ৭টা ২০ মিনিটে রাজশাহী স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্টেশনে গিয়ে বাংলা ট্রেন দেখে জুলাইযোদ্ধাদের একাংশ ক্ষুব্ধ হন। তারা আন্তঃনগর বনলতা ও সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো ট্রেনের দাবি করেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, যে রকম ট্রেন দেওয়া হয়েছে সেই রকম ভাড়াই তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন নিতে হলে তাদের আরও বেশি ভাড়া দিতে হতো। কিন্তু তারা বরাদ্দ করা ট্রেনে উঠতে চাননি। তারা ট্রেনের সামনে বসে পড়েন। অনেকেই শুয়ে পড়েন। কবে বেশিরভাগ জুলাইযোদ্ধা ট্রেনের উঠে পড়েছিলেন। তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। শেষে পর্যন্ত ট্রেনে উঠে পড়া যোদ্ধাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা পেরে উঠেন না। তারা তখন রেললাইন থেকে উঠে পাশের সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে পড়েন। বিশেষ ট্রেনটি সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল। অবশেষে সেটি ৮টা ১৩ মিনিটে রাজশাহী স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়।
এই কারণে সিল্কসিটি ট্রেনটিও নির্ধারিত সময় রাজশাহী থেকে ছাড়া সম্ভব হয়নি। এই ট্রেনটি ৪৫ মিনিটে বিলম্বে সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যায়।
স্টেশন মাস্টার শহীদুল আলম জানায়, ‘তারা যেমন ভাড়া দিয়েছেন তাদের জন্য আমাদের কর্তৃপক্ষ সেই রকম ট্রেনের ব্যবস্থা করেছেন। এখন তাদের কয়েকজন এসে আন্তঃনগর বনলতা ও সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো ট্রেন দাবি করে বসলেন। এই নিয়ে ট্রেন ছাড়তে খানিকটা বিলম্ব হয়েছে। যারা বিশেষ ট্রেনে যাননি তাদের ৩৫ জনকে অন্তঃনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠানো হয়েছে।