ঢাকা শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

বিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ আহত ২০

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০৯:৪২ এএম

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ইসলামপুর-হরিপুর কবি ফজের আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বিদ্যালয় চত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে বিএনপি সমর্থিত মাসুদুর রহমান, রহমত উল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, ইমদাদুর রহমান এবং জামায়াত সমর্থিত শামীম হোসাইন, মুক্তার বিশ্বাস, সফর আলী, তোতা মিয়া, জহুরুল ইসলামসহ অন্তত ১৫ জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার মাস আগে ইসলামপুর-হরিপুর কবি ফজের আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার সদস্য বিশিষ্ট বিদ্যালয় পরিচালনা (আহ্বায়ক) কমিটি গঠন করা হয়।

সেখানে আহ্বায়ক করা হয় জামায়াত সমর্থিত জহুরুল ইসলামকে, এ কারণে বিএনপি সমর্থিতদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে স্থানীয় বিএনপি সমর্থিতদের সঙ্গে জামায়াতের বিরোধ তৈরি হয়। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হতো। সর্বশেষ গতকাল সকালে বর্তমান আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম স্কুলে গেলে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বাগবিত-ার একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। 

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে জামায়াত-বিএনপির আহত নেতাকর্মীরা আরেক দফা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হামলার বিষয়ে বিএনপি ও জামায়াত পরস্পরকে দোষারোপ করছে।

জামায়াত সমর্থিত বর্তমান আহ্বায়ক ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সদর দক্ষিণের সভাপতি আহত জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রশাসন, শিক্ষা কর্মকর্তা ও আমরাসহ সব পক্ষের মানুষ মিটিং করে বোর্ডের মাধ্যমে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে আমাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তবে প্রথমদিন আমরা স্কুলে গেলে তারা (বিএনপি) বাধা দেয়। গতকালও একই ঘটনার পনুরাবৃত্তি হয় এবং তারই জেরে এই মারামারি। 

অভিযোগের বিষয়ে মহারাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহজাহান আলী বলেন, সকালেই ফোন আসে স্কুলে দুপক্ষের সংঘর্ষ হতে পারে, এরপর আমি সেখানে নেতাকর্মীদের নিয়ে ছুটে যায় মীমাংসা করার জন্য। দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলার সময় জহুরুল ও তার ভাইসহ তাদের সমর্থকরা আমাদের লোকজনকে মারধর শুরু করে। ওরা ভোর থেকেই লাঠি ও রামদা নিয়ে স্কুলে বসে ছিল। বর্তমান যে আহ্বায়ক কমিটি তার তো কোনো বৈধতা নেই। তারপরও ওরা জোর করে পদ দখল করে থাকবে, মাস্টারদের মাস্টারি করতে দেবে না। এটা তো ঠিক না।

সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ্ আল মামুন জানান, চার মাস আগে বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন করা নিয়ে মারামারির সূত্রপাত। একপক্ষ গঠিত কমিটি মানতে নারাজ। তারাই বৃহস্পতিবার এ হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি এবং থানায় কেউ অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।