বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া

প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০২৫, ০২:১২ পিএম

সেবা মিলছে না ৭ কোটি টাকার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে

আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া

প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০২৫, ০২:১২ পিএম

সেবা মিলছে না ৭ কোটি টাকার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

প্রতিষ্ঠানটির নাম মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, অথচ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে নেই কোনো শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক। চিকিৎসাসেবা মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। সেখানে আশপাশের ৩০ গ্রামের নারী ও শিশুরা কাঙ্ক্ষিত জরুরি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বর্তমানে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটিতে আছেন ফার্মাসিস্ট নাজিম উদ্দিন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মোক্তাদুল হাসানসহ একজন অফিস সহকারী। এটি সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে তৃণমূলের নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়।

নির্মাণের পর থেকেই হাসপাতালের মূল গেট থাকে বন্ধ, শুধু একজন প্রহরী কর্মরত। জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি ভবন নির্মাণ, আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করলেও প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা সানজিদা জানান, জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়। এই হাসপাতালের কার্যক্রম চালু থাকলে আমরা জরুরি চিকিৎসাসেবা পেতাম।

এভাবেই দিনের পর মাস মাসের পর বছর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটিতে কোনো রকমে নামমাত্র চলছে কার্যক্রম। ফলে সেবাপ্রত্যাশীদের বাধ্য হয়ে বাড়তি টাকা খরচ করে যেতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে একজন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র পরিদর্শিকা, নার্স ও সুইপার পদ শূন্য রয়েছে।

বিনা পয়সায় সন্তান প্রসব, লাইগেশনসহ নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে ১৬ ধরনের সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও মেলে না তার কিছুই। নেই রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষাগার। স্থানীয় রোগীদের বাধ্য হয়েই ভরসা করতে হয় বেসরকারি ক্লিনিকের ওপর।

সরেজমিনে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের প্রতিবেদক দেখেছেন, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটির কার্যক্রম চলছে জরাজীর্ণ একটি ভবনে। হাসপাতালের নামা কিংবা উঠার জন্য নেই সিঁড়ি। গর্ভবতী মা ও বোনেরা আসলেও পড়তে হয় বিপাকে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ফাটল ধরে আগাছা জন্মেছে। ভবনে দেয়াল ও ছাদে ছত্রাকের ছড়াছড়ি। চিকিৎসা কর্মকর্তার কক্ষ থাকলেও নেই এমবিবিএস ডাক্তার। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা না দিতে পেরে গল্পগুজব করে সময় কাটাচ্ছেন কয়েকজন অফিস স্টাফ।

কর্মরত ফার্মাসিস্ট নাজিম উদ্দিন জানান, আমরা রোগীদের পর্যাপ্ত সেবা দিতে চাইলেও সরঞ্জাম, ডাক্তার না থাকায় দিতে পারি না।

অনিমা নামে এক গর্ভবতী বলেন, এখানে ডাক্তার দেখাতে এসে পড়তে হয়েছে বিপাকে, নেই চিকিৎসক কিংবা পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি।

সুমনা বলেন, আমার দুই মাসের মেয়ে তিন দিন ধরে অসুস্থ। বিনা মূল্যে চিকিৎসার কথা শুনে এখানে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছিলাম। গিয়ে দেখি নাপা, প্যারাসিটামল, মলম ছাড়া মেলেনি অন্য কিছুও।

রাজিহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার জানান, জনবলের অভাবে হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালের কার্যক্রম চালু করা হলে ব্যাপক উপকৃত হবে এলাকাবাসী। হাসপাতালটি চালুর দাবি করছি।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে কর্মরত মোহেদী হাসান জানান, ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারী বরাদ্দ না থাকায় কার্যক্রম শুরু হয়নি। তবে জনবল বরাদ্দর জন্য আবেদন করা হয়েছে। জনবল বরাদ্দ করা মাত্রই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটির কার্যক্রম শুরু করা হবে।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারিহা তানজিম জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে জনকল্যাণের স্বার্থে দ্রুত মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি চালুর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

আরবি/এসআর

Link copied!