পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি শেষে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রোববার (১৫ জুন) সকাল থেকে রপ্তানি কার্যক্রম শুরু চালু হয়েছে। তবে দুপুরের মধ্যে ভারত থেকে কোনো ট্রাক পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি। ওপারে অনলাইন সিস্টেমে ত্রুটির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (১৫ জুন) সকাল থেকে কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে বলে জানান বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার। টানা ছুটিতে আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন দিয়ে দু’দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক ছিল।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার জানান, ‘দীর্ঘ ঈদের ছুটির পর আজ রোববার (১৫ জুন) সকাল থেকে দু’দেশের মধ্যে রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়েছে। ওপারে অনলাইন সিস্টেমে ত্রুটির কারণে কোনো আমদানি পণ্য বন্দরে আসেনি। পুরোদমে কাজ শুরু হতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে। বন্দরে পণ্যজট কমাতে দ্রুত পণ্য খালাসের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তবে প্রচণ্ড গরমে বন্দর অভ্যন্তরে বা ওপেন ইয়ার্ডে হ্যান্ডলিং শ্রমিকরা কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘রোববার (১৫ জুন) দুপুর ২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৩০ ট্রাক পণ্য ভারতে রপ্তানি হলেও ভারত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে আমদানি হয়নি। ওপারের নেট লাইন খারাপ থাকায় কোনো পণ্য ঢুকাতে পারছে না পেট্রাপোল বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ৮০ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। আমদানিকারকরা গ্রামে ঈদ করতে যাওয়ায় এখনো ঢাকায় তাদের অফিস খোলেনি। তাই বন্দর থেকে পণ্য খালাসও তেমন নেওয়া হচ্ছে না। পুরোপুরি কাজ শুরু হতে দুই-এক দিন লেগে যাবে বলে তিনি জানান।’
এদিকে ঈদের ছুটিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে টানা ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় ওপারের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় তীব্র ট্রাকজট সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, ‘বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত পণ্যবাহী ট্রাক পেট্রাপোল বন্দর এলাকা, বন্দরের ট্রাক টার্মিনাল, পেট্রাপোল পার্কিং ও বনগাঁ পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।’
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি বলেন, ‘ঈদে টানা ১০ দিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও এ সময় পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক ছিল। ভারত-বাংলাদেশ ভিসা কার্যক্রম সীমিত থাকায় এ সময় যাত্রীদের চাপ ছিল না। যাতায়াতকৃত যাত্রীদের যেন দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেজন্য ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছিল।’
বেনাপোল শুল্কভবনের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের জানান, ‘টানা ছুটি শেষে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। প্রথম দিনে কাস্টম হাউসে ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি কম থাকায় কর্মকর্তারা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাটিয়েছেন একে অপরের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করে। আজ সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হলেও ঢিমেতালে চলছে, তবে দুই এক দিনের মধ্যে পুরোদমে কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’