যশোরে ক্যান্সার আক্রান্ত এক নারীর মৃত্যুর দায় একটি ক্লিনিকের ওপর চাপানোর অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, ওই নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কিছু লোক বাণিজ্যের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্লিনিক মালিক। ক্লিনিক মালিকের দাবি, রোগী ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেও তাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।
জানা যায়, ২২ অক্টোবর যশোর শহরের জেলরোডে অবস্থিত মাতৃসেবা ক্লিনিকে ফরিদা ইসলাম (৩৮) নামের এক রোগীর জরায়ু টিউমারের অস্ত্রোপচার করেন ডা. সোনিয়া শারমিন। অপারেশনের পর রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। ফরিদা ইসলাম যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের এড়েন্দা গ্রামের প্রবাসী আয়নাল হকের স্ত্রী।
কিন্তু ফরিদার স্বজনরা দাবি করেছেন, অপারেশনের কারণে ফরিদার জরায়ুর ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে। ৩ নভেম্বর ফরিদার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারও মাতৃসেবা ক্লিনিক এ নেওয়া হয়। এরপর ডা. সোনিয়া শারমিন তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে খুলনায় পাঠান এবং পরবর্তী সময়ে ক্যান্সার শনাক্ত হয়ে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ নভেম্বর ভোরে ফরিদার মৃত্যু হয়।
মাতৃসেবা ক্লিনিকের মালিক মনিরুল ইসলাম জানান, ২২ অক্টোবর ফরিদার অপারেশন করা হয়। রোগী অপারেশনের পর সুস্থ হয়ে ৫ দিন পর ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। পরে ৩১ অক্টোবর সেলাই কাটানোর জন্য ফের ক্লিনিকে আসেন। তখনো রোগী সুস্থ ছিলেন। ৩ নভেম্বর জ্বর ও গলার ব্যথা নিয়ে তাকে ক্লিনিকে আনা হলে ডা. সোনিয়া তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। এরপর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম আরও অভিযোগ করেন, ‘ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর পর তার স্বজন পরিচয়ে কয়েকজন এসে ক্লিনিকের ওপর দায় চাপিয়ে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করেছেন।’
ডা. সোনিয়া শারমিনও জানিয়েছেন, ‘অস্ত্রোপচারের সময় ফরিদার জরায়ু বড় দেখে তার মধ্যে ক্যান্সারের সম্ভাবনা ছিল। তাই আমরা বায়োপসি টেস্ট করার জন্য তাকে পরামর্শ দিয়েছিলাম, কিন্তু রোগীর স্বজনরা এতে রাজি হননি। রোগীর অস্ত্রোপচার সম্পূর্ণ সঠিক ছিল এবং তার মৃত্যু ক্যান্সারের কারণে হয়েছে।’
এ ঘটনায় বিষয়টি আরও তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন ক্লিনিক মালিক এবং চিকিৎসকরা।


